মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০

মেরুদন্ডের ব্যথার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

Myelitis homeopathic treatment.

হোমিওপ্যাথি একটি লক্ষনভিত্তিক চিকিৎসা। রোগ লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচনই এর মুখ্য কথা। রোগের চিকিৎসা নয় রোগীর চিকিৎসা করা হয়।বর্তমানে পিঠের বেদনা একটি কমন রোগ। প্রতিদিনই রোগীর কাছে শোনা যায় যে তার পিঠের হাড়ের ক্ষয় হয়েছে।এলোপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে পিঠের বেদনা নিয়ে রোগী গেলে তাকে যেকোন ভাবেই বিভিন্ন টেষ্ট করার পরামর্শ দিয়ে রোগীকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন।পিঠের হাড় ক্ষয়ের কথা এলোপ্যাডিথক ডাক্তার বলে দেয়ার পরে, কোন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার তাহার রোগ লক্ষণ বিবেচনায় সামান্য চিকিৎসাতেই ভালো হয়েছে।এতে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ডাক্তার যা বলেছিল তা সঠিক নয়।পিঠের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি অনেক সফল।

মায়ালাইটিসের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের লক্ষণভিত্তিক আলোচনা 

*এব্রোটেনাম
বাতজনিত ক্রনিক মায়ালাইটিস, সহসা মেরুদন্ড মধ্যে তীব্র বেদনা বোধ হয় এবং নড়াচড়ায় অত্যাধিক বৃদ্ধি পায়, উপুড় হয়ে শয়নে স্বস্হি বোধ হলে এব্রোটেেনাম উপযোগী।

*অ্যাকোনাইট
এনিস্হিসিয়া ডোলোরোসা, মুখমধ্য ও জিহ্বার অসাড়তা;বাহু ও হাতে অসাড়তা ও ঝিনঝিন বোধ, হাতে ও পায়ে শীতল, স্পর্শনুভূতি শুন্য স্ফীত।

*এলুমিনা
মেরুদন্ড মধ্যে তপ্ত লৌহশলকা প্রবিষ্ট হইবার ন্যায় বেদনা, পক্ষাগাত, অন্ধকারে বা চক্ষুমুদ্রিত করিয়া চলিতে পারেনা;বসিয়া থাকলে নিতম্বদেশ অসার হইয়া যায়।

*এনাকার্ডিয়াম
দেহকান্ড বেষ্টন করিয়া বন্ধনের ন্যায় অনুভুতি,মেরুদন্ড মধ্যে ছুচালো ছিপির ন্যায় অনুভুতি-দেহ সন্চালনে বৃদ্ধি, জানুসন্ধি পক্ষাগাতের ন্যায় দুর্বল বোধ হয়-মনে হয় যেন কসিয়া বাধিয়া রাখা হইয়াছে, জিহ্বা ভারী মনে হয়, সৃতিশক্তির-দুর্বলতা, কোষ্ঠবদ্ধতা।

*এপিস
লাম্বার প্রদেশে বেদনা, সেক্রাম প্রদেশে তীব্র বেদনার জন্য বসিতে অক্ষমতা, হাতদিয়ে কিছু ধরিতে পারে না-মুখে হাত তুলিতে পারে না-খাওয়াইয়া দিতে হয়;হাতে ও পায়ে পক্ষাগাত ও শীর্ণতা, গ্রীবাস্হ গ্রন্হি স্ফীত ও প্রস্তরের ন্যায় কঠিন বোধ হয়।

*আর্সেনিক এল্বাম
ডিফিউজ মায়েলাইটিস, অত্যাদিক শ্বাসকষ্ট ও উদ্বেগ;বক্ষের চতুর্দিকে বন্ধের ন্যায় অনুভুতি, গার্ডল পেন, নিম্নাঙ্গ প্রথমে আক্রান্ত হয়, পরে তাহা হস্তে হয় ও তৎসহ খিলধরার ন্যায় বেদনা বোধ হয়, প্রতঙ্গগুলি শীতল ও স্পর্শনুভুতি শুন্য।

*বেলেডোনা
মেরুদন্ডের মধ্যে ছুরিকাঘাতের ন্যয় বেদনা, জ্বাল ও দপদপানি, লাম্বার প্রদেশে খিলদরার ন্যায় বেদনা, হস্তদয়ে অসাড়তা ও কাটা ফোটানোর মতো বেদনা  যন্ত্রনা, নিম্নাঙ্গের এবং তৎসহ মুত্রস্হলির গ্রীবা ও মরদ্বার পেশির পক্ষাগাত।

*ব্রায়োনিয়া
আঘাতজনিত মায়েলাইটিসে আর্নিকা, সালফিউরিক এসিড, রাস টক্স, সিকিউটা, দেহসন্চালনে অত্যাদিক বৃদ্ধি, আহত স্হানে অত্যাদিক বেদনা, অস্হিরতা ও প্রবল পিপাসা।

*ককিউলাস ইন্ডিকা
সমগ্র মেরুদন্ডের মধ্যে আক্ষেপিক সংকোচন অনুভব-নড়াচড়ায় বৃদ্ধি, সুক্ষ্ণ তার দ্বারা বাহু হইতে হস্ত পর্যন্ত নানিয়া ছিরিয়া পেলিবার ন্যায় অনুভুতি, নিম্নাঙ্গের পক্ষাগাত সহ আষ্টতা,অসাড়তা ও আঘাত লাগিবার ন্যায় বেদনা বোধ, বসিয়া থাকিলে পদতলে অসাড় বোধ হয়।

*ডালকামারা
চর্মদ্ভেদ বাহির  হতে না পেরে, অথবা  শীতল আদ্র বায়ুুে রোগ লক্ষণ প্রকাশ, স্পর্শে (বিশেষতঃ মাসিক ঋতু কালে) মায়েলাইটিস, নাড়াচাড়ায় মেরুদন্ডে ও হস্তপদাদিতে তীব্র বেদনা।

*জেলসিমিয়াম
মায়েলাইটিসের প্রথম অবস্হা, ইচ্ছানুযায়ী অঙ্গসন্চালনে অক্ষমতা, মস্তিস্কে বিশৃঙ্খলা, ঝাপসা দৃষ্টি জিহ্বা ও গলনালীর পক্ষাঘাত অসারে মৃত্র নির্গমন হলে জেলসিমাম উপযোগী ঔষধ,।

*মার্কুরিয়াস
পদদ্বয়, মুত্রথলী ও মলভান্ডের পক্ষাঘাত, পক্ষাঘাতগ্রস্হ স্হানে মধ্যে মধ্যে জিলিক দেয়, মেরুদন্ডে প্রবল বেদনা নড়াচড়ায় বৃদ্ধি, ত্বকে স্পর্শনুভুতি লুপ্ত।

*নাক্স ভুমিকা
প্রাতঃকালে সহসা পদদয়ে শক্তির অভাব বোধ হয়, হাতে ও পায়ে অবশ বোধ হয়। কাটিদেশ বেষ্টন করিয়া বন্ধনের ন্যায় অনুভুতি,মেরুদন্ড ও হস্তপদাদিতে অসারতা ও কুটকুটানি অনুভব, ঠান্ডা লাগিয়া অত্যাদিক স্ত্রী সঙ্গম হেতু অথবা মেরুদন্ডের রোগবশতঃ আড়ষ্টতা সুনিদ্রার পর উপশম।

*ওপিয়াম
জিহ্বার পক্ষাঘাতবশতঃ কথা বলিতে কষ্ট, হস্তঘাত, মুত্রস্হলী গ্রীবার পক্ষাঘাত (স্ফিংটার পেশীর পক্ষাঘাত হয় না বলিয়া মুত্রাবরোধ ঘটে ও মুত্রথলী পরিপুর্ণ হইলে অসারে বিন্দু বিন্দু মুত্রপাত হয় ) এবং অন্ত্রর পেশীর পক্ষাঘাত।

*ফসফরাস
অতিরিক্ত স্ত্রী সঙ্গম বা জলে ভিজিবার ফলে মেরুদন্ডের মধ্যে প্রদাহজ্বালা, বিভিন্ন ভার্টিব্রা স্পর্শে বেদনা বোধ, হস্ত পদদয়ের অসাড়তা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, ঝাপসা দৃষ্টি মাথাঘোরা, কোষ্ঠবদ্ধতা।

*ফাইসোস্টিগমা
মেরুমজ্জার রক্তাধিক্যবশতঃ পক্ষাঘাত ও টিটেনাসের ন্যায়আক্ষেপ, গ্রীবার আড়ষ্টতা, সমগ্র মেরুদন্ড ব্যাপিয়া আড়ষ্টতা ও বেদনা, তজ্জন্য সরলভাবে বসিতে বা দাড়াইতে পাড়ে না- সম্মুখে অবনত হইতে হয়।

*পিকরিক এসিড
মধ্যে মধ্যে টনিক ও ক্লোনিক আক্ষেপ, পদদয় বিস্তৃত করিয়া দারাইতে হয়, পদদ্বয়ে ঝিনঝিন অনুভব, পচন্ড লিঙ্গোচ্ছাস সহ প্রবল কামলিস্পা ও অস্হির নিদ্রা মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শুক্রস্খলন।

*সিকেলী
প্রথমে মুখমন্ডলের পেশীতে আক্ষেপ উপস্হিত হয় এবং পরে ব্যাপক হয়, জিহআবার আক্ষেপ, পেটের মধ্যে আক্বষ্টবৎ বেদনা, হৃদ্স্পন্দন, পৃষ্ট হইতে হস্ত ও পদাঙ্গুলিবিস্তৃত ঝিনঝিন;পদদ্বয়ের পক্ষাঘাত ও তন্মধ্যে ঝাকি ও জিলিক অনুভব;প্রসারক পেশীতে বেদনাযুক্ত আক্ষেপ, মুত্রস্হলী ও মলভান্ডের পক্ষাঘাত।

*ষ্ট্যামোনিয়াম
সার্ভাইকাল ডর্স্যাল মেরুদন্ডাস্হি বা ভার্টিব্রা মধ্যে অবিরাম বেদনা ও স্হানে স্হানে স্পর্শে বেদনা বোধ।অন্ধকারে চলিতে গেলে মাতা ঘুরায়, ঝাপ দৃষ্টি, মুখমন্ডলের পেশীর আক্ষেপ বা নর্তন, হস্তপদাদির কম্পন বা পক্ষাঘাত।

*সালফার
স্ক্যাপুলাদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্হানে জ্বালা ও টাটানি বেদনা, লাম্বার প্রদেশে রক্তাধিক্যবশতঃ পদদয়ের পক্ষাঘাত ও মুত্ররোধ, মস্তকশীর্ষে উত্তাপ, প্যালপিটেশন, নিদ্রাহীনতা।

*ট্যারেন্টুলা
মেরুদন্ডর স্পর্শাতিশয্যতা-মেরুদন্ড মৃদুভাবে স্পর্শ করিলেও বুকের মধ্যে আক্ষেপিক বেদনাসহ অশেষ যন্ত্রনা, দুর্দান্ত শীরঃপীড়া, মস্তক মধ্যে সুচিবিধনবৎ যন্ত্রনা-বালিশের সহিত মাথা ঘর্ষণ করিলে উপশম বোধ;সমগ্র শরীরে জ্বালাময় উত্তাপ।

*জিঙ্কাম মেট
লাম্বার প্রদেশস্হ বা ভার্টিব্রা মধ্যে দীর্ঘস্হায়ী তীব্র বেদনা-বসিয়া থাকিলে বৃদ্ধি দাড়াইলে উপশম, সমগ্র মেরুদন্ডের জ্বালাযুক্ত বেদনা, বুকের মধ্যে উত্তাপ এবং উদ্বেগ বোধ, প্যালপিটেশন হলে জিঙ্কাম উপযোগী।

উপরে উল্লেখিত ঔষধ ছাড়াও অনেক ঔষধ ব্যবহার হয়।এই লেখাটি চিকিৎসার সামান্যই উপস্হাপিত হয়েছে।এই ঔষধ কিনে এই রোগের চিকিৎসা না করাই ভাল।কোন দক্ষ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের সাহায্য নিন।

ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার
ইভা হোমিও হল।
বাইপাইল, সাভার,ঢাকা।
মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮।
গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন