শনিবার, ৬ জুন, ২০২০

বাতজ্বরের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

HOMEOPATHIC REMEDIES FOR RHEUMATIC FEVER

বাত জ্বর কি ?
বাতজ্বর এমন একটি রোগ যা সারা শরীরে বিশেষ করে হৃদপিণ্ড, শিরা এবং স্নায়ুতন্ত্র কোষে প্রদাহ সৃষ্টি করে৷ এটা হৃদপিণ্ডের ভাল্বের সমস্যার জন্য বিশেষভাবে দায়ী৷ বাতজ্বরে সাধারণত ৫-১৫ বছরের শিশুরা বেশী আক্রান্ত হয়৷ জ্বর আসে,গায়ে ব্যথা, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে, ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়৷

বাতজ্বরের লক্ষণসমুহ

  • **হৃদপিণ্ড/বুকে ব্যথা,বুক ধড়ফড় করা,পা ফুলা,হৃদপিন্ডের ভাল্বের সমস্যা৷
  • **বড় বড় গিরা ফুলা এবং প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া।
  • **স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা-হাত,পা,মাথা অথবা শরীরে অনেক ক্ষেত্রে মৃদু কম্পন দেখা দেয়।
  • **ত্বকে বিশেষ ধরনের লালচে দাগ হওয়া।
  • **ত্বকে গুটি হওয়া,মাথার পিছন দিকে, কনুইয়ের নীচে, হাতের গিটের সামনের ভাগে অথবা হাঁটুর কাছাকাছি হাড়ের উপরে গ্রন্থির মতো এক ধরনের গোটা দেখা যেতে পারে৷

বাতজ্বরের জটিলতা

  • **হৃদ যন্ত্রের প্রদাহ।
  • **হার্টফেল।
  • **বুক ধড়ফড় করা।
  • **হার্টের ক্রিয়াগত বিশৃংখলা।

বাতজ্বরের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের লক্ষনভিত্তিক আলোচনা

*একোনাইট
শীতকালের শুস্ক, শীতল বায়ুর প্রভাবে হঠাৎ প্রবল জ্বর, শুস্কচর্ম, অস্হিরতা, প্রবল পিপাসা, অত্যান্ত ওআগুনের ন্যায় উত্তপ্ত মুত্র, ইত্যাদি লক্ষণে প্রাথমিক অবস্হায় উপযুক্ত। আক্রন্ত গ্রন্হির স্হান পরিবর্তনশীল বেদনা, আরক্তিমস্ফীতি। বুকে খচখচানি বেদনার জন্ম শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট, হৃৎপিন্ডের মধ্যে প্রবল আলোড়ন ও উদ্দ্যেগ।

*এপিস মেল
হুলফুটানা জ্বালাকর বেদনা ও টাটানিসহ আক্রান্ত স্হানের অবশতা বা কাঠিন্য ও শোথ বা স্ফীতি, বেদনাদির ডান হইতে বামে প্রবাহিত, স্বল্পমুত্র; তৃষ্ণাহীনতা মধ্যে মধ্যে হঠাৎ চিরিক দিয়া উঠে, তাপ প্রয়োগ বা উষ্ণগৃহ অসহ্য বোধ, প্রভূত ঘর্ম হইলে লক্ষণাদির উপশম হয়।

*আর্নিকা
আক্রান্ত সন্ধির স্ফীতি সহ ছিড়িয়া ফেলার ন্যায় বেদনা। অত্যান্ত টাটানি ও অসারতা, সামান্য নড়াচড়ায় বা শয্য গরম হইয়া উঠিলে বৃদ্ধি;স্পর্শভয়ে ভীত হইয়া আৎকাইয়া উঠে; শয্য কঠিন মনে হয়; হৃৎপিন্ডের নিম্নাংশে দিবারাত্রি চাপপ্রদ বেদনায় আর্ণিকা মন্টেনা উপযোগী।

*আর্সেনিকএলবম
অস্হিরতা, অবসন্নতা, মৃত্যুভয়, রাতের বা দিনের মধ্যভাগে বাতজ্বরের বৃদ্ধিতে আর্সেনিক এলবম উপযোগী।

*ব্রাইয়োনিয়া এলবম
কেটে ফেলার ন্যায়, সূচিবিদ্ধের ন্যায়, চেপে ধরার ন্যায় বেদনা। সামান্য নড়চড়াতে বেদনার বৃদ্ধি ও চুপচাপ থাকলে উপশম হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য- মল শুকনো এবং কঠিন।প্রচুর পানি পিপাসা- ঠোট মুখ শুকিয়ে যায়।জিহবা ও গায়ের চামড়া শুকনো।একোনাইটে বেদনার উপশম হলে, ব্রাইয়োনিয়া আরোগ্য করে।

*রাসটক্স
রাত্রে,বিশ্রামকালে,প্রাতঃকালে জেগে উঠার সময় এবং শয্যার উত্তাপে বেদনার বৃদ্ধি। নড়াচড়ায় বা আক্রান্ত স্থানে উত্তাপ প্রয়োগে বেদনা উপশম। অত্যন্ত অস্থিরতা। ঠান্ডা বাতাস সহ্য হয় না। প্রথম নড়াচড়ায় বেদনার বৃদ্ধি এবং পরে নড়াচড়ায় উপশম।

*পালসেটিলা
সন্ধিস্থান অল্প স্ফীত ও সামান্য লালচে। পরিবর্তনশীল বেদনা-বেদনা এক স্থান হতে অন্য স্থানে চলে যায়।জানু, গোড়ালী,হাত পায়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সন্ধিতে বেদনা। রোগী খুব গরম কাতর কিন্তু পিপাসা শুন্য।রোগী খুব নরম প্রকৃতির, সামান্য কারনে কান্না করে।ঔষধটি কোমল ও নরম স্বভাবের মানুষদের জন্য নির্দেশিত হয়।

*কলোফাইলাম
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সন্ধিতে বাত বেদনা।হাত পায়ে এবং আঙুলের সন্ধিতে অত্যন্ত বেদনা।বেদনা এক স্থানে বেশীক্ষন থাকে না। গরম প্রয়োগে বেদনার উপশম হয়।

*ক্যালকেরিয়া কার্ব
দৈহিক অবয়ব স্থুল বা মোটাসোটা।ঠান্ডা লাগার প্রবণতা। শরীরের সমস্ত জয়েন্ট ও মাংসপেশী ব্যাথা হয়। সমস্ত শরীর ঘামে বিশেষত মাথা বেশী ঘামে। রোগীর ডিমের প্রতি অতিরিক্ত চাহিদা।ঔষধটির ধাতুগত বৈশিষ্ট্য প্রধান নির্দেশক।

*টিউবারকুলিনাম
বংশগত ক্ষয়দোষের ইতিহাস। ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার প্রবণতা। গরম সেক ও মালিশে বাত ব্যাথার উপশম। পরিবর্তনশীল বেদনা। ভ্রমণ পিয়াসি মানুষ। কুকুরের ভীষন ভয়। মাংস খেলে বাত ব্যাথা বাড়ে।

*মেডোরিনাম
সুনির্বাচিত ঔষধের ক্রিয়াহীনতা। বংশগত সাইকোসিস প্রবণতা যুক্ত রোগী ।বাতের বেদনা সমস্ত শরীর আক্রমণ করে। পায়ের গোড়ালি এত ব্যাথা হয় যে রোগী হাটতে পারে না। সমস্ত কষ্ট দিনের বেলায় বৃদ্ধি পায়।গরম প্রয়োগে ব্যাথা বেদনা হ্রাস পায়।শরীরের গীটগুলো ফুলে যায়। রোগের কথা বর্ননা করতে চোখে অশ্রু আসে।
বাতজ্বর চিকিৎসায় উপরোক্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ছাড়াও অনেক সদৃশ ঔষধ রয়েছে। এই রোগটি অত্যন্ত জটিল এবং অবহেলা করা উচিত নয়।একজন দক্ষ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা নিবেন।

বাতজ্বর প্রতিরোধ
অস্বাস্থ্যকর ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশ বা বস্তি এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যেই এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। তাই এমন পরিবেশ এড়িয়ে চলা উচিত। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা যেমন খাবার পরে দাঁত-মুখ ভালো করে পরিষ্কার করা।বিশেষ করে রাতে শোয়ার আগে ও সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করা।নিয়মিত পরিমিত পানি পান করা উচিত। গলায় সংক্রমণ বা গলাব্যথা হলে অবহেলা না করে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা করলে বাতজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা কম হয় বা একেবারেই থাকে না। তাৎক্ষণিক চিকিৎসক না পেলে বা না দেখানো গেলে বাসায় হালকা গরম পানি ও লবণ দিয়ে কমপক্ষে দিনে তিনবার পাঁচ মিনিট সময় ধরে গরগর করা। তাহলে যেমন গলাব্যথা বা গলা সংক্রমণ ভালো হয়ে যাবে, তেমনি বাতজ্বর হওয়ার ঝুঁকিও থাকবে না।

অনুগ্রহপূর্বক আমার মোবাইল এপসটি ডাইনলোড করুন।আমার সকল লেখা এক সাথে পড়ুন।নিয়মিত আপডেট নিন।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.aslamconsole.android.evahomeohall&fbclid=IwAR3mHp4BauqONW3oiO3eVCVTaCqrsPvcY5Z4qq3826ps_Avf6-wN-SixmEg

ইভা হোমিও হল।

ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার।
বাইপাইল, সাভার, ঢাকা।
মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮।
গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন