সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০

করোনা ভাইরাস কভিড ১৯ সংক্রমিত রোগীর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা



করোনা ভাইরাস কভিড ১৯ সংক্রমণের লক্ষণসমষ্টি

আপনি কিভাবে বুঝবেন যে আপনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত?

ü  গলা চুলকাবে

ü  গলা শুকিয়ে আসবে

ü  শুকনা কাশি হবে

ü  তীব্র জ্বর

ü  শ্বাস ছোট হয়ে আসবে

ü  গন্ধ ও স্বাদের অনুভুতি চলে যাবে

ভাইরাস ও করোনা সার্স ভাইরাস কি ?

ভাইরাস (Virus ) হলো একপ্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা অনুবীজ যারা জীবিত কোষের ভিতরেই মাত্র বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এরা অতি-আণুবীক্ষণিক এবং অকোষীয়। ভাইরাস জীব হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা, এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমত আছে। ভাইরাস মানুষ, পশু-পাখি, উদ্ভিদের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। এমনকি, কিছু ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে বংশবৃদ্ধি করে, এদের ব্যাক্টেরিওফাজ বলে।

ভাইরাস ল্যাটিন ভাষা হতে গৃহীত একটি শব্দ। এর অর্থ হল বিষ। আদিকালে রোগ সৃষ্টিকারী যে কোন বিষাক্ত পদার্থকে ভাইরাস বলা হত। বর্তমান কালে ভাইরাস বলতে এক প্রকার অতি ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক অকোষীয় রোগ সৃষ্টিকারী বস্তুকে বোঝায়। উদ্ভিদ ও প্রাণীর বহু রোগ সৃষ্টির কারণ হল ভাইরাস। ভাইরাস কে জীবাণু না বলে 'বস্তু' বলা হয়। কারণ, জীবদেহ ডিএনএ, আরএনএ ও নিওক্লিক এসিড দিয়ে গঠিত, তাই ভাইরাস অকোষীয়।

পটভূমি

হল্যান্ডের প্রাণরসায়নবিদ এডলফ মেয়ার (১৮৮৬) তামাক গাছের মোজাইক নামক ভাইরাস রোগ নিয়ে সর্বপ্রথম কাজ শুরু করেন। স্থানীয়ভাবে রোগটি বান্ট, রাস্ট বা স্মাট নামে পরিচিত ছিল। কারো মধ্যে যাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয় সেজন্য মেয়ার একে টোবাকো মোজাইক (TMV)

নামে আখ্যায়িত করেন। রাশিয়ান জীবাণুবিদ দিমিত্রি ইভানোভস্কি (১৮৯২) তামাক গাছের মোজাইক রোগ নিয়ে গবেষণা করে প্রমাণ করেন, রোগাক্রান্ত তামাক পাতার রস ব্যকটেরিয়ারোধক Chamberland filter দিয়ে ফিল্টার করার পরও সুস্থ তামাক গাছে রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম। তখন তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন যে, তামাক গাছে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু ব্যাকটেরিয়া হতে নিঃসৃত কোনো বিষাক্ত পদার্থ কিংবা এর চেয়ে ক্ষুদ্রকায় কোনো জীবাণু। ওলন্দাজ জীবাণুতত্ত্ববিদ মারটিনিয়াস বাইজেরিনিক (১৮৯৮) অনুমান করেন, তামাকের এ রোগের কারণ হয়তো কোনো এক ধরনের সংক্রমণশীল জীবন্ত তরল পদার্থ। তিনিই সর্বপ্রথম এ পদার্থকে ভাইরাস নাম দেন। পরবর্তীতে মার্কিন জীব-রসায়নবিদ ডব্লু এম স্ট্যানলি (১৯৩৫) তামাকের মোজাইক ভাইরাসকে পৃথক করে কেলাসিত করতে সক্ষম হন। এ অবদানের কারণে তিনি ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে চিলিতে এফ সি বাউডেন, এন ডব্লু পিরি প বার্নাল টিএমভি (TMV) হতে প্রটিন ও নিউক্লক এসিড  সমন্বয়ে গঠিত এক প্রকার তরল স্ফটিকময় পদার্থ উৎপন্ন করতে সক্ষম হন। ফ্রয়েংকাল -কনরোট ও অন্যান্য গবেষক ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ভাইরাসের নিউক্লিক এসিডকে প্রোটিন হতে পৃথক করেন এবং প্রমাণ করেন যে, নিউক্লিক এসিডই ভাইরাস রোগের বাহক।

আবাসস্থল

উদ্ভিদ, প্রাণী, ব্যাকটেরিয়া, সায়ানো ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি জীবদেহের সজীব কোষে ভাইরাস সক্রিয় অবস্থায় অবস্থান করতে পারে। আবার নিষ্ক্রিয় অবস্থায় বাতাস, মাটি, পানি ইত্যাদি প্রায় সব জড় মাধ্যমে ভাইরাস অবস্থান করে। কাজেই বলা যায়, জীব ও জড় পরিবেশ উভয়ই ভাইরাসের আবাস।

আয়তন

ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া থেকে ক্ষুদ্র। ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এদের দেখা যায়না। সাধারণত এদের আকার 10 nm থেকে 300 nm পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে কিছু ভাইরাস এর চেয়ে বড় হতে পারে।

আকার-আকৃতি

ভাইরাস সাধারণত নিম্ন লিখিত আকৃতির হয়ে থাকে। গোলাকার, দণ্ডাকার, বর্তুলাকার, সূত্রাকার, পাউরুটি আকার, বহুভুজাক্রিতি, ব্যাঙ্গাচি আকার প্রভৃতি।

গঠন

ভাইরাসের দেহে কোন নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম নেই, কেবল প্রোটিন এবং নিউক্লিক এসিড দিয়ে দেহ গঠিত। কেবলমাত্র উপযুক্ত পোষক দেহের অভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এদের অভ্যন্তরীণ তথ্য বহনকারী সূত্রক দুই প্রকারের হতে পারে- ডি. এন. এ এবং আর. এন. এ।

ভাইরাসের বাইরের প্রোটিন আবরণকে ক্যাপসিড বলা হয়। ক্যাপসিডের গঠন প্রধানত দুই প্রকার, সর্পিলাকার এবং সমবিশ তলাকার। ভাইরাস অতি অণুবীক্ষণিক সত্তা। ভাইরাসের গড় ব্যাস ৮-৩০০ ন্যানোমিটার।

জিনগত গঠন

ভাইরাসের প্রজাতিভেদে জিনোমের আকারও ভিন্ন হয়। এসএসডিএনএ সার্কোভাইরাসের জিনোম আকারে সবচেয়ে ক্ষুদ্র। Circoviridae পরিবারের এই ভাইরাসের মাত্র দুই প্রোটিন রয়েছে ও জিনোমের আকার মাত্র দুই কিলোবেস সবচেয়ে বড় জিনোমের ভাইরাস হলো প্যান্ডোরাভাইরাস। প্রায় ২৫০০ প্রোটিনের কোড সম্বলিত এই ভাইরাসের জিনোমের আকার প্রায় দুই মেগাবেস। ভাইরাস জিনের খুব কমই ইন্ট্রোন থাকে আর সেগুলো জিনোমে এমনভাবে সাজানো থাকে যেন তারা ওভারল্যাপ বা একে অপরের উপর সুবিন্যস্ত হতে পারে। সাধারণত, আরএনএ ভাইরাসের জিনোমের আকার ডিএনএ ভাইরাস অপেক্ষা ছোট হয়। কেননা এই ধরনের ভাইরাসের রেপ্লিকেশনের সময় বেশি ভ্রান্তি হওয়ার সুযোগ থাকে।

বংশবৃদ্ধি

ভাইরাস পোষক দেহে বংশবৃদ্ধি করে থাকে। এদের জীবনচক্র দুই প্রকারের হয়ে থাকে:

১. লাইটিক চক্র।

২. লাইসোজেনিক চক্র।

১. লাইটিক চক্র - ভাইরাস পরজীবী হিসেবে বংশবৃদ্ধি করে তাই এদের বংশবিস্তার প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করা কঠিন। যে জীবনচক্রে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে ফাযের (অণুজীব আক্রমণকারী ভাইরাস) অপত্য কোষগুলো শেষ পর্যায়ে ব্যাকটেরিয়াকে বিগলিত করে মুক্ত হয়, সে জীবনচক্রকে লাইটিক চক্র বলে। লাইটিক চক্র সম্পন্নকারী ফাজকে লাইটিক ফাজ বলে। লাইটিক চক্র সাধারণত ব্যাকটেরিওফাযের জীবনচক্রে দেখা যায়। নিচে T2 ভাইরাসের E. coli ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ক্ষেত্রে লাইটিক চক্রের ধাপগুলো বর্ণনা করা হল:

১. পৃষ্ঠলগ্ন হওয়া-  এ পর্যায়ে T2 ভাইরাস পোষক E. coli ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরে স্পর্শকতন্তু ও স্পাইক এর সাহায্যে পৃষ্টলগ্ন হয়। E. coli ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরে ফায প্রোটিনের জন্য রিসেপ্টর সাইড থাকায় রিসেপ্টর সাইডের প্রোটিনের সাথে ফায ক্যাপসিডের স্পর্শক তন্তুর প্রোটিনের রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে ফাযটি ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীরে সংযুক্ত হয়ে যায়।

২. অনুপ্রবেশ: পৃষ্টলগ্ন হওয়ার পর ভাইরাসের লেজের স্পাইক থেকে লাইসোজাইম এনজাইম নিঃসৃত হয়। এই এনজাইমের কার্যকারিতায় ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরের স্তরকে দ্রবীভূত করে সূক্ষ্ণ নালিকার সৃষ্টি করে। এ প্রক্রিয়াকে ড্রিলিং বলে। T2 ভাইরাসের লেজের প্রোটিন আবরণটি বাইরে পড়ে থাকে।

৩. প্রোটিন সংশ্লেষণ-  ভাইরাসের DNA পোষক কোষে প্রবেশ করার পর ব্যাকটেরিয়া কোষের DNA-এর উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ও পলিমারেজ এনজাইমের সহায়তায় mRNA উৎপাদরেন মাধ্যমে প্রোটিন তৈরি শুরু করে। এই প্রোটিন পরবর্তীতে ভাইরাসের বহিঃরাবনণ বা খোলস (মাথা ও লেজ) তৈরিতে অংশ গ্রহণ করে।

৪. জিনোম তৈরী- এ পর্যায়ে পলিমারেজ এনজাইমের সহাতায় ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিওটাইড ব্যবহার করে ভাইরসের DNA অসংখ্য প্রতিরূপ সৃষ্টি করে।

৫. একত্রীকরণ ও নির্গমন- এ দশায় জিনোমগুলো প্রোটিন আবরণের দ্বারা মোড়কের ন্যায় আবৃত হয় এবং অপত্য ভাইরসের সৃষ্টি করে। অপত্য ভাইরাসের চাপে পোষক ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীর বিদীর্ণ হয়ে যায়। ফলে পরিণত ফাজগুলো পেষক কোষের বাইরে নির্গত হয়।

লাইটিক চক্রের মাধ্যমে T2 ব্যাকটেরিওফাজের সংখ্যা বৃদ্ধির সমগ্র প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে লাগে ২০-৩০ মিনিট এবং এস সময়ের মধ্যে প্রায় ২০০ টি নতুন অপত্য ব্যাকটেরিয়ওফাজ সৃষ্টি হয়।

২. লাইসোজেনিক চক্র: এই প্রক্রিয়ায় ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াম কোষে তার নিউক্লিক এসিড প্রবেশ করায় ঠিকই, কিন্তু সেটা লাইটিক চক্রের মত কোষকে ভেঙে ফেলে না বা ভাইরাসের কোষের সংখ্যাবৃদ্ধি করে না। এই চক্রে ভাইরাস তার নিউক্লিক এসিড ব্যাকটেরিয়ামের কোষের ডিএনএ এর সাথে যুক্ত করে দেয় এবং ভাইরাল নিউক্লিক এসিড ব্যাকটেরিয়াল ডিএনএ এর সাথে সাথে সংখ্যা বৃদ্ধি করে। যেহেতু এখানে কোষের মৃত্যু ঘটে না, তাই একে বলে মৃদু আক্রমণ। আর যেই সব ভাইরাস এই চক্র ব্যবহার করে, তাদের বলে টেমপারেট ফাজ। ল্যামডা ভাইরাস এক ধরনের টেম্পারেট ফাজ, এরা E.coli কে আক্রমণ করে।

করোনা ভাইরাস কি?

করোনা ভাইরাস হ'ল ভাইরাসগুলির একটি গ্রুপ যা মানব ও পাখি সহ স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে রোগের কারণ হয়। মানুষের মধ্যে ভাইরাসের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ ঘটে যা সাধারণত হালকা হলেও খুব বিরল ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে। গরু এবং শূকরগুলিতে এগুলি ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে, মুরগীতে এটি একটি ওপরের শ্বাস প্রশ্বাসের রোগের কারণ হতে পারে। এমন কোনও ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ নেই যা প্রতিরোধ বা চিকিত্সার জন্য অনুমোদিত।

ক্রম নীডোভাইরালেস ক্রোনোনোভাইরিডে পরিবারের সাবফ্যামিলি অর্থোকোরোনোভাইরিনে করোনাভাইরাসগুলি ভাইরাস। করোনাভাইরাসগুলি ধনাত্মক বোধের একক-প্রসারিত আরএনএ জিনোম এবং হেলিকাল প্রতিসমের নিউক্লিয়োক্যাপসিড সহ খামিত ভাইরাস। করোনাভাইরাসের জিনোমিক আকার প্রায় ২৬ থেকে ৩২ কিলোব্যাসের মধ্যে থাকে, এটি আরএনএ ভাইরাসের জন্য বৃহত্তম।

"করোনাভাইরাস" নামটি লাতিন করোনার এবং গ্রীক κορώνη (কোরিয়ান, "মালা, পুষ্পস্তবক") থেকে এসেছে, যার অর্থ মুকুট বা হলো। এটি ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি দ্বারা ভাইরাসগুলির সংক্রামক রূপটি (ভাইরাসের সংক্রামক রূপ) বুঝায়, যার একটি বৃহৎ, বাল্বাস পৃষ্ঠের অনুমানগুলির একটি প্রান্ত রয়েছে যা একটি রাজকীয় মুকুট বা সৌর করোনার স্মৃতি মনে করে একটি চিত্র তৈরি করে। এই রূপচর্চাটি ভাইরাল স্পাইক (এস) পেপলোমার্স দ্বারা তৈরি করা হয়, যা প্রোটিন যা ভাইরাসের পৃষ্ঠকে সমৃদ্ধ করে এবং হোস্ট ট্রপিজম নির্ধারণ করে।

সমস্ত করোনভাইরাসগুলির সামগ্রিক কাঠামোতে যে প্রোটিনগুলি অবদান রাখে সেগুলি হ'ল স্পাইক (এস), খাম (ই), ঝিল্লি (এম) এবং নিউক্লিয়োক্যাপসিড (এন)। এসএআরএস করোনাভাইরাস (নীচে দেখুন) এর নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে, এস এর একটি সংজ্ঞায়িত রিসেপ্টর-বাঁধাই ডোমেন ভাইরাসটির সংযুক্তিটি তার সেলুলার রিসেপ্টারের সাথে মধ্যস্থতা করে, অ্যাঞ্জিওটেনসিন-রূপান্তরকারী এনজাইম 2 (এসিই 2) কিছু করোনভাইরাস (বিশেষত বেটাকোরোনাভাইরাস সাবগ্রুপ এ এর ​​সদস্যদের) হিমাগ্লুটিনিন এসেটেরেস (এইচই) নামে একটি সংক্ষিপ্ত স্পাইকের মতো প্রোটিন রয়েছে। যেসব ভাইরাস গুলো RNA দিয়ে তৈরী, তারা কুখ্যাত চরিত্রের হয়ে থাকে , যেমন- HIV, Hepatitis C, Influenza, Rabies, Ebola, Dengue, Polio ইত্যাদি। সম্প্রতি এই দলে যোগ হয়েছে নতুন নাম- Corona virus..এই করোনা ভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে চায়না তে ২০০২ সালে। এই ভাইরাসের স্ট্রাকচার দিয়েই এর নামকরণ করা হয়েছে। এদের গায়ে চারিদিকে ব্যাঙের ছাতার মত Halo (Corona) সাজানো থাকে। এর ভিতরে একটা Single stranded RNA থাকে। এটার দুইটা সাবটাইপ আছে- 229E এবং OC43…

আমাদের যে কমন কোল্ড হয় Rhinovirus দিয়ে, করোনা ভাইরাস দিয়েও একই রকম কমন কোল্ড হয়, কিন্তু সিরিয়াস ফর্মে গেলেই Atypical Pneumonia এর রূপ ধারন করে । যাকে Severe Acute respiratory syndrome বা SARS বলে। তাই অনেকে একে সার্স ভাইরাসও বলে থাকে। এই ভাইরাস ছড়ায় বাতাসে শ্বাস নিঃশ্বাসের মাধ্যমে। শীতকালেই এর প্রকোপ দেখা যায়। ধরে নেয়া হয়- বাদুর এই ভাইরাসের একমাত্র রিজার্ভার।

২০০২ সালের পর ২-৩ পর পর ছোট খাটো আক্রমণ এই ভাইরাস চায়নার আশে পাশে করেছে। ২০২০ সালের মহামারীর পূর্বে প্রায় ৮৫০০ জন করোনা ভাইরাসের রোগী সনাক্ত হয়েছিল। তার মধ্যে মারা গিয়েছিল প্রায় ৮০০ জন (প্রায় ১০% fatality)।

২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যে( বিশেষ করে সৌদি আরবে) এই ভাইরাসের এক মহামারী দেখা গিয়েছিল, তাকে বলা হতো মার্স করোনা ভাইরাস ( Middle East respiratory syndrome Corona virus)।

এই ভাইরাসের ইনফেকশনে ৫০% মানুষের কোনো সিম্পটমই প্রকাশ পায় না । অনেক সুস্থ্য বাচ্চাদের শরীরে এই ভাইরাসের এন্টিবডি তার উপযুক্ত প্রমাণ। এটার ইনফেকশন মূলত ফুসফুসের Epithelium কেন্দ্রিক, এর বাইরে অন্য অর্গান আক্রান্ত হয় না । শরীরে ভাইরাসের Incubation period ৩ থেকে ১০ দিন।

রোগের সিম্পটম –

গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম (এসএআরএস) মূল নিবন্ধ: গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম ২০০৩ সালে, গুরুতর তীব্র শ্বসন সিন্ড্রোম (এসএআরএস) এর প্রাদুর্ভাবের পরে যা এশিয়ার পূর্ববর্তী বছর শুরু হয়েছিল, এবং বিশ্বের অন্য কোথাও, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লুএইচও) একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে যে একটি উপন্যাস করোন ভাইরাস দ্বারা চিহ্নিত পরীক্ষাগার গুলির সংখ্যা ছিল সার্সের কার্যকারক এজেন্ট। ভাইরাসটি আনুষ্ঠানিকভাবে সারস করোনভাইরাস (SARS-CoV) নামকরণ করা হয়ে ছিল। ৮,০০০ এরও বেশি লোক সংক্রামিত হয়েছিল, যার মধ্যে প্রায় ১০% মারা গেছে। মধ্য প্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম মূল নিবন্ধ: মধ্য প্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে, নতুন ধরণের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছিল, প্রথমে তাকে নভেল করোনাভাইরাস ২০১২ বলা হয়েছিল এবং এখন সরকারীভাবে মধ্য প্রাচ্যের রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম করোনা ভাইরাস (এমআরইএস-সিওভি) নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শীঘ্রই একটি বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করেছে। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ এ ডাব্লুএইচওর আপডেট জানিয়েছে যে ভাইরাসটি ব্যাক্তি থেকে অন্যের কাছে সহজেই যায় না বলে মনে হয়। তবে, ২০১৩ সালের ১২ ই মে, ফ্রান্সের মানব-মানবিক সংক্রমণের একটি ঘটনা ফরাসী সামাজিক বিষয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে। তিউনিসিয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে মানব-মানবিক সংক্রমণের ঘটনাও জানা গেছে। দুটি নিশ্চিত হওয়া মামলায় এমন লোকেরা জড়িত ছিলেন যারা মনে করেন তাদের মৃত পিতার কাছ থেকে এই রোগটি ধরা পড়েছিল, যারা কাতার এবং সৌদি আরব সফরের পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিলেন। তা সত্ত্বেও, এটি প্রদর্শিত হয় যে ভাইরাসটি মানুষের থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ার সমস্যা রয়েছে, কারণ বেশির ভাগ সংক্রামিত ব্যক্তিরা ভাইরাস সংক্রমণ করে না। ৩০ শে অক্টোবর ২০১৩ অবধি সৌদি আরবে ১২৪ টি মামলা এবং ৫২ জন মারা গেছে। ডাচ ইরেসমাস মেডিকেল সেন্টার ভাইরাসের অনুক্রমের পরে ভাইরাসটিকে একটি নতুন নাম দেওয়া হয়েছিল, হিউম্যান করোনাভাইরাস – ইরসমাস মেডিকেল সেন্টার (এইচসিওভি-ইএমসি)। ভাইরাসটির চূড়ান্ত নাম হল, মিডিল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম করোনা ভাইরাস (এমআরইএস-কোভি)। ২০১৪ সালের মে মাসে, কেবল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কেবল দুটিই মার্স-কোভ সংক্রমণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল, উভয়ই সৌদি আরবে কর্মরত এবং তারপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারী স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মধ্যে ঘটেছে, যার মধ্যে একটি ইন্ডিয়ানাতে এবং একটি ফ্লোরিডায় চিকিত্সা করা হয়ে ছিল। এই উভয় ব্যক্তিকেই অস্থায়ী ভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে ছিল এবং পরে তাকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালের মে মাসে, প্রজাতন্ত্র কোরিয়ায় মার্স-কোভিড একটি প্রাদুর্ভাব ঘটে ছিল, যখন মধ্য প্রাচ্যে ভ্রমণ করেছিলেন এমন একজন ব্যক্তি তার অসুস্থতার চিকিত্সার জন্য সিওল অঞ্চলের ৪ টি বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এর ফলে মধ্য প্রাচ্যের বাইরে মার্স-কোভের বৃহত্তম বিস্ফোরণ ঘটেছে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত, এমআরএস-সিওভি সংক্রমণের ২৪৬৮ টি পরীক্ষাগার পরীক্ষা গুলি দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৮৫১ মারাত্মক, মৃত্যুর হার প্রায় ৩৪.৫% ছিল।

নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর, কাশি, মাথা ব্যাথা। আর সিরিয়াস ফর্মে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট। Respiratory mucosa তে Edema তৈরি করে, যার ফলে অক্সিজেন নিতে পারে না, ঠিক মত। যার ফলে Severe Hypoxia দেখা যায়। যে পেশেন্ট গুলো মারা যায় তার কারণ হলো- Refractory Hypoxemia … এই ভাইরাস ফুসফুসের Angitensin Converting Enzyme-2 এর সাথে বাইন্ড করে থাকে , যার ফলে Fluid Balance Dysregulation হয়।

SARS রোগে chest Xray করলে Ground Glass Infiltration পাওয়া যায়, কিন্তু কোনো Cavitation পাওয়া যায় না। Blood এ WBC, Platelet Count কমে যায়। PCR অথবা এন্টিবডি টেস্ট দিয়ে রোগ কনফার্ম করা যায়।
করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯ (COVID-19 )

করোনা ভাইরাসের লক্ষণ সর্দিকাশি দিয়েই শুরু হয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কোন রোগ ধরে হয় না লক্ষণসমষ্টি নিয়ে আমাদেরর ওষুধ দিতে হয়। শুরুতেই যদি করোনার প্রাথমিক লক্ষণগুলো রোগীর ব্যক্তিগত লক্ষণ মিলিয়ে হোমিও ওষুধ প্রয়োগ করলে সমস্যা দ্রুতই কমে যায়, সেটা সাধারণ সর্দি কাশিই হোক বা Covid-19 এর কারনেই হোক, সমস্যা আর জটিলতার দিকে যাবে না।

একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে বলবো, আক্রান্ত রোগীকে সঠিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার পাশাপাশি ওয়েল ম্যানেজমেন্ট (যেটা আধুনিক হাসপাতালগুলোতে দেয়া হয়) দিতে হবে। করোনা সার্স প্রতিরোধই এর প্রধান চিকিৎসা। সবসময় মাস্ক ব্যবহার করা জরুরী, সাথে সাথে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। সন্দেহ জনক সার্স আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগ যেমন জ্বর, কাশি, শর্দি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। যেসব দেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে সেসব দেশ ভ্রমন করা থেকে বিরত থাকা, অথবা যারা ঐ সব দেশ থেকে আসে, তাদের ভালো করে পরীক্ষা করা ও চিকিৎসা করা। গ্লোবালাইজেশনের যুগে রোগ Pandemic হতে সময় লাগে না। তাই সবার সচেতনতাই পারে এই করোনা ভাইরাস ভয়ঙ্কর ছোবল থেকে সবাইকে রক্ষা করতে পারে।

করোনা সার্সআক্রান্ত রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সদৃশ ঔষধ নির্বাচন গাইড

v  ক্যাম্ফরা /Camphor officinalis

প্রাথমিক পর্যায়ে বেশি নির্দেশিত হয়। প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়, নাক বন্ধ থাকে, নাক শুষ্ক, চুলকায়। কপালে ব্যথা করে, গলাব্যথা। ওষুধটি পানির সাথে মিশিয়ে ঘন ঘন প্রয়োগ করলে এবং যথাসময়ে দিতে পারলে কয়েক ডোজেই রোগী ভাল হয়ে যায়।

ডা: টাইলার বলেন যে, কারো যদি শরীর ঠাণ্ডা হয় (ঠাণ্ডার সংস্পর্শে গিয়ে বা যে কোন ভাবে) শরীর এখনো গরম হয়নি, সর্দিস্রাব এখনো দেখা দেয় নি তবে Camphor টিংচার চিনির সাথে মিশিয়ে শরীর গরম না হওয়া পর্যন্ত ঘন ঘন খেলে আর সর্দি দেখা দেয় না। ক্যাম্ফর টিংচার বহু ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয় তাই এর মাদার টিংচার অন্য ওষুধের সাথে না রেখে অন্য ঘরে রাখতে হবে। Kent এর মতে  উচ্চ শক্তির জন্য এ কথা প্রযোজ্য না

v  আর্সেনিক এলবম /Arsenicum album:

ভারতের AYUSH মন্ত্রণালয় এ ওষুধটিকে COVID-19 এর প্রতিরোধক ওষুধ হিসেবে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। নাক থেকে পাতলা স্রাব যায়, ক্ষতকারি স্রাব, উপরের ঠোট হাজিয়া যায়। নাক সময় বন্ধ থাকে, খুব বেশি হাঁচি হয়। হাঁচি দিলেও নাক খোলে না। নাকের মধ্যে একটা স্থানে সুড়সুড় করে যেন পালক দিয়ে সুড়সুড়ানি দিচ্ছে। হাঁচির পরও সুড়সুড়ানি কমে না, হাঁচি দিতেই থাকে। নাকেই ঠাণ্ডা যেনে আগে লাগে, আবহাওয়ার পরিবর্ততে হাঁচি হয়। প্রথমে নাকে ঠাণ্ডা লাগে এরপর ঠাণ্ডা বুকে যায়। আর্স সবসময়ই শীতে কাতর হয়, বাতাসের ঝাপটা সহ্য করতে পারে না। ঠাণ্ডায় যেন জমে যায়, যতই কাথা গায়ে দেয় ঠাণ্ডা যায় না। আগুনের কাছ থেকে সরে না। রক্ত যেন বরফের নালি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এমন লাগে। নাক জ্বলে, গলা জ্বলে, গরম পানি খেলে জ্বালা কমে। জ্বরের সময় শরীর খুব গরম হয়, তখন মনে হয় রক্তের নালি দিয়ে যেন ফুটন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শীতে বাড়ে, মধ্যরাত, দুপুরের রোগ বাড়ে, রাতে বাড়ে, গরমে উপশম, গরম কক্ষে ভাল অনুভব করে। অস্থিরতা, ঘন ঘন অল্প পরিমানে পানি পান করে, মৃত্যুভয়।

v  এলিয়াম সেপা /Allium cepa

সর্দিস্রাব, নাক ও চোখে থেকে পানি পড়ে, সাথে মাথা ব্যথা করে। ঘন ঘন হাঁচি হয়, নাক থেকে যে স্রাব যায় সেটি ক্ষতকারি, নাক ও ঠোটে ঘায়ের মতো হয়ে যায়। চোখ থেকেও প্রচুর পানি পড়ে কিন্তু চোখের পানি ক্ষতকর না। (ইউফ্রেসিয়াতে এর উল্টো অর্থাৎ চোখের পানি ক্ষতকর কিন্তু নাকের পানি অক্ষতকর।) রোগী গরমকাতর, গরম ঘরে, আবদ্ধ কক্ষে বাড়ে, খোলা বাতাসে উপশম হয়। বিকালে সমস্যা বেশি হয়। পিপাসা, ল্যারিক্স এর প্রদাহ হয়, কাশি দিলে মনে হয় স্বরনালী ছিড়ে যাবে। গলা চেপে কাশি দেয়। ঠাণ্ডা বাতাসের নিশ্বাস নিলেই কাশি শুরু হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায়ই  লাগে। নাকের প্রদাহজনি সর্দি, পরে প্রদাহ স্বরনালী, ব্রঙ্কাসে পৌঁছায়, কাশি দেখা দেয়। শ্বাস-প্রশ্বাসে মিউকাস জমে ঘরঘর শব্দ করে।

v  বেলেডোনা/ Belladonna

আকস্মিক প্রবল রোগা আক্রমন। নাকের সর্দি অবরুদ্ধ হয়ে প্রচণ্ড মাথাব্যথা করে। মুখে ও মাথায় রক্তের প্রাবল্য। চোখ লাল, মুখমন্ডল রক্তিমাভ। মাথা গরম, হাত-পা ঠাণ্ডা। দপদপানি ব্যথা। সবকিছুতে যন্ত্রনার প্রাবল্য। যন্ত্রনা হঠাৎ আসে, হঠাৎ যায়। বুকে সর্দি কম থাকে। গলা শুষ্ক। গলা যেন কাঁচা হয়ে গেছে, দেখতে চকচকে লাল। শুষ্ক কাশি, গলা ছিড়ে যায়। স্বরনালীর প্রদাহ, স্বরনালী ফুলে যায়, স্বরভঙ্গ দেখা দেয়। খুব ব্যথা করে। উচ্চ জ্বর, শুষ্ক। পিপাসা থাকে না।

v  ব্রাইয়োনিয়া/ Bryonia alba:

প্রায়ই নাক থেকে শুরু হয়, হাঁচি হয়, নাকের প্রদাহ হয়ে সর্দিস্রাব হয়, চোখ থেকে পানি পড়ে, প্রথম দিন চোখে নাকে, মাথায় ব্যথা হয়। তারপর নাকের পিছন ভাগ,  গলা, স্বরনালি (larynx), আক্রান্ত হয়। গলা ভেঙে যায়, ব্রঙ্কাইটিস দেখা দেয় পরবর্তীতে প্লুরার প্রদাহ এবং শেষে নিউমোনিয়া দেখা দেয়। [ML Tyler] শুষ্ক আক্ষেপিক কাশি, রাতে বাড়ে, পানি পান ও খাওয়ার পর বাড়ে, গরম কক্ষে প্রবেশ করলে বাড়ে, গভীরভাবে শ্বাস নিলে বাড়ে। কাশিতে বুকে শুঁই ফোটানোর মত ব্যথা করে, সাথে মাথাব্যথা করে, কাশিতে যেন মাথা ফেটে যাবে এমন লাগে। ব্রাইয়োনিয়ার রোগী, খিটখিটে স্বভাবের, প্রচুর পানি পিপাসা থাকে, চুপচাপ শুয়ে থাকতে চায়, কথা বলতে চায় না। সমস্ত মিউকাস মেম্ব্রেন শুষ্ক হয়ে থাকে। ঠোক শুকিয়ে যায়। ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বৃদ্ধি। Dr. Manish Bhatia, UK এর Society of Homeopath এ ওষুধটিকে COVID-19 এর প্রফাইলেকটিক হিসেবে ব্যবহার করতে বলেছেন।

v  নাক্স ভুমিকা /Nux vomica:

এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ওষুধ। Richard Pitcairn এ ওষুধটিকে বর্তমান করোনা ভাইরাসের প্রতিকার ও প্রতিরোধ ওষুধ হিসেবে সবার আগে বিবেচনা করেছেন। ঠাণ্ডার শুরুর পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়। নাক বন্ধ, বা রাতে নাক বন্ধ হয়ে থাকে, দিনের বেলায়, গরম রুমে প্রচুর সর্দিস্রাব হয়। মাথার সামনের দিকে ব্যথা হয়। ঠাণ্ডা বাতাসের প্রতি খুবই সংবেদনশীল। গলা ব্যথা। খুব শীতকাতর রোগী, সামান্য নড়াচড়ায়, বা গায়ে আবরন সরালে শীতার্ত হয়ে পড়ে। এমনকি প্রবল জ্বরের সময়ও আবৃত হয়ে থাকতে পছন্দ করে, নড়াচড়া করে না। একোনাইটের মতো শুষ্ক ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে রোগ দেখা দেয়, একোনাইট উদ্বিগ্ন আর নাক্স খিটখিটে। নাক বন্ধ হয়ে প্রচুর হাঁচি হয়, খোলাবাতাসে হাঁচি বাড়ে। খোলাবাতাসের সংস্পর্শে কাঁপতে থাকে। পানি পান করার পরও কাঁপতে থাকে। হাত পা, পিঠসহ সারাদেহে শীত লাগতে থাকে, গরম প্রয়োগেও শীত যায় না। নাক্স ভম এর রোগী খুব সংবেদনশীল বিশেষ করে, সামান্য বাতাস সহ্য হয় না, খিটখিটে স্বভাবের।

v  মার্ক সল /Mercurius sol

শীতে গায়ে কাটা দিয়ে উঠে। বিকালে বাড়ে, রাতে বাড়ে, বিছানায় বাড়ে। নাক থেকে পাতলা পানির মতো স্রাব হয়, সাথে হাঁচি। চোখ থেকে পানি পড়ে। গলাব্যথা, খোঁচামারা, হুলফোটান ব্যথা, সবসময় ঢোক গিলতে হয়, মুখে অনেক লালা জমে যায়। মুখ, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ। লালাও দুর্গন্ধ। অল্পজ্বর কিন্তু প্রচুর ঘাম হয়, ঘামে জ্বর কমে না। নাকের সর্দি হাজাকর, সবুজাব বা পুজের মতোও হয়। গলা বসে যায়, শুষ্ক কাশি, গলায় খুসখুস করে। গরম ঘরে বৃদ্ধি পায় কিন্তু আবার ঠাণ্ডাও সহ্য করতে পারে না। জিহ্বা মোটা, থলথলে, দাঁতের ছাপ থাকে।

v  জেলসিমিয়াম /Gelsemium

1918-19 সালের ভয়াবহ স্প্যানিশ ফ্লুতে এ ওষুধটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। Society of Homeopath, UK, ব্রায়োনিয়ার সাথে জেলসিয়াম ওষুধকেও প্রিভেন্টিভ ওষুধ হিসেবে রিকমেন্ড করেছে। নিদারুন দুর্বলতা, মাথাঘোরা, শরীর থরথর করে কাঁপে। জ্বরের সাথে অল্প পিপাসা থাকে। গরম আদ্র আবহাওয়ায় সর্দি। নাকের স্রাব হাজিয়ে যায়, নাকে ক্ষত হয়। নাক দিয়ে যেন গরম তপ্ত পানি বের হচ্ছে এমন লাগে। জেলসের সর্দি ধীরে ধীর বিকাশ লাভ করে। মৃদু শীতকালের ঠাণ্ডা-সর্দি ও জ্বরে এটি বেশি লাগে। বিরক্তিকর, খুসখুসে কাশি, আগুনের পাশে থাকলে কমে। সারা শরীরে ভারবোধ, খুব দুর্বল লাগে। পিঠে শীত লাগে, শীত পিঠ বেয়ে উপরে ওঠে আবার নামে। মাথাব্যথাসহ ফ্লুর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ওষুধ।

v  রাসটক্স /Rhus toxicodendron :

ঠাণ্ডা আদ্র আবহাওয়া থেকে রোগের উৎপত্তি। বিশেষ করে ঘামের সময় যদি ঠাণ্ডা আদ্র আবহাওয়ার সংস্পর্শে যায় তখন ঠাণ্ডা লেগে যায়।

v  ডলকামারা / Dulcamara :

নাসাস্রাব; গলা লাল হয়ে ফুলে যায়। প্রত্যেক ঠাণ্ডাতে নাক বন্ধ হয়ে যায়। ঠান্ডায় বাড়ে, গরমে কমে। গাঢ় হলদে, দুর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মা স্রাব হয়। রাতে, বিশ্রামে বাড়ে, রাতে অস্থিরতা দেখা দেয়, ভয় পায়। স্বরভঙ্গ হয়, গলা যেন ছিলে গেছে, খসখসে, কথা বলার শুরুতে বাড়ে কিছু কথা বলার পর স্বরভঙ্গ কমে। ঠাণ্ডা পানির পিপাসা, বিশেষ করে রাতে, কিন্তু ঠাণ্ডা পানি খেলে শীত লাগে এবং কাশি দেখা দেয়। অনাবৃত থাকলে বাড়ে। শরীর ব্যথা, যেন হাড় ব্যথা করে <রাতে, বিকালে, হাচি কাশিও বাড়ে।

v  হিপার সালফ/ Hepar Sulph:

শুষ্ক ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে ঠাণ্ডা-সর্দি লাগে (acon,nux v), নাক, কান, গলা, স্বরনালি, বুক থেকে শ্লেষ্মা বের হয়। নাকে ঠাণ্ডা, প্রচুর স্রাব, যতবারই ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে যায় ততবারই হাঁচি হয়। হাঁচি, নাক থেকে প্রথমে পাতলা পানির মতো স্রাব যায়, পরবর্তীতে স্রাব ঘন, হলদে হয়, দুর্গন্ধ শ্লেষ্মা। ঠাণ্ডার সংস্পর্শে গলা বসে যায়, কাশি হয়, নাক দিয়ে ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করলেই বাড়ে, হাত বা পা কাথার বাইরে বের করতে পারে না, বের করলেই কাশি। ঘাম বেশি, সারা রাত ঘামে, তাতে কোন উপশম হয় না। অতিসংবেদনশীল, স্পর্শ সহ্য হয় না, ব্যথায় রোগী খুব কাতর হয়ে পড়ে, ঠাণ্ডা বাতাস একদম অসহ্য। রুমের দরজা জানলা বন্ধ করে কোন ফাঁকফোকর থাকলে সেটাও বন্ধ করে। ঘরের মধ্যে কেউ যদি ঠাণ্ডা প্রবেশ করায় তাকে মারতে চায়। আদ্র গরম আবহাওয়ায় ভালবোধ করে। ডা: ফেরিংটন এ ওষুধকে রোগের শুরুতে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন, তাতে নাকের সর্দি চাপা পড়ে বুকে জমে যেতে পারে। যদি ঠান্ডা বুকে জমে যায় তাহলে পরবর্তীতে ফসফরাস ভাল কাজ করে এবং রোগীকে আরোগ্য করে।

v  ফসফরাস/ Phosphorus

একবার নাক থেকে প্রচুর সর্দিস্রাব হয় পরক্ষনেই নাক বন্ধ হয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে এ অবস্থা চলতে থাকে। (নাক্স, পালস) গলাব্যথা, মাথাব্যথা, জ্বরজ্বর লাগে। নাকের সর্দি শুকিয়ে নাকে চটা পড়ে, সেটা শক্তভাবে নাকের ভিতর আটকে থাকে। নাকের একটা ছিদ্র খোলা থাকলে আরেকটা ছিদ্র বন্ধ থাকে। হাঁচি দিলে বুকে ও মাথায় ব্যথা করে। নাক ঝাড়লে রক্ত আসে, নাক লাল, চকচকে, ব্যথাযুক্ত। বুকে চাপবোধ,শক্ত কাশি, বুক চেপে ধরে, শুষ্ক, যন্ত্রনাপূর্ণ, খোলা বাতাসে বাড়ে। ফসফরাসের ঠান্ডা বুক বা স্বরনালি থেকেই শুরু হয়। ঠান্ডা পানির পিপাসা, একাকী থাকেতে চায় না, লবন খায়, অন্ধকারে ভুতের ভয়, ঝড়বৃষ্টির ভয়।

v  পালসেটিলা/Pulsatilla

সর্দি- ঘন, হলুদ, নাক ও গলা থেকে নিঃসৃত হয়। ঘ্রান ও খাবারের স্বাদ পায় না। অথবা মুখ তিতা হয়ে থাকে। পিপাসাহীন, ক্ষুধা কম। রাতে নাক বন্ধ থাকে, সকালে নাক থেকে সর্দি স্রাব যায়। খোলা বাতাসে নাক খুলে যায়, ঘরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। তাই যখনই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে তখনই খুব শ্লেষ্মা যায়, এবং সন্ধ্যায় বৃদ্ধি। নরম স্বভাবের রোগী, ক্রন্দনশীল, সান্ত্বনা চায়, খোলা বাতাস ও সঞ্চালনে উপশম।

v  সালফার / Sulphur

সমস্যা যখন ক্রনিক হয়। যাদের নাকে সহজেই প্রদাহ হয়ে সর্দিস্রাব হয়। অবিরাম হাঁচি, নাক বন্ধ। নাক থেকে ঘন দুর্গন্ধ স্রাব হয়। একোনাইটের রোগী ব্যর্থ হলে সালফার, বা অন্য ওষুধে যখন কাজ না করে তখন এটি মাথায় আনতে হয়।

উপদেশ

আমাদের শরীরের করোনা এন্টিবডি তৈরী করতে হবে। তাই সবাই প্রস্তত হই শারিরীক ও মানসিক ভাবে।
Covid19 পজিটিভ হলে যা জানা জরুরি
1. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
2. ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
3. প্রতিদিন সকাল ১১ টার মধ্যে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রোদ পোহানো.
4. কমপক্ষে একটি করে ডিম প্রতিদিন।
5. প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম।
6. প্রতিদিন কমপক্ষে ১.৫ লিটার পানি পান এবং প্রতি বেলায় গরম খাবার খাওয়া জরুরি।
করোনা ভাইরাসের দেহের pH এর মান 5.5 থেকে 8.5 বৃদ্ধি পায় তাই এর চেয়ে বেশি pH level এর খাবার গ্রহনের মাধ্যমে আমরা এর রাসায়নিক গঠন ভেংগে দিতে পারি।
•• 5.5 থেকে 8.5 এর থেকে বেশি pH level এর কিছু খাবার হল :
* লেবু - 9.9 pH
* পাতিলেবু - 8.2 pH
*এভোকাডো - 15.6 pH
* রসুন- 13.2 pH *
* আম- 8.7pH
* ছোট কমলা - 8.5pH
* আনারস- 12.7 pH
* কমলালেবু - 9.2 pH
*জিংক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
চীন যে তিনটি ঘরোয়া নিয়ম মেনে করোনা মুক্ত হয়েছেন।
১. তারা দিনে চারবার কেটলি থেকে গরম পানির ভাপ নিচ্ছেন।
২. দিনে চারবার গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করছেন।
৩. আর দিনে চারবার গরম চা পান করছেন।
এভাবে টানা চারদিন এই ৩টি কাজ করেই ভাইরাসটিকে দমন করছেন তারা।
এভাবেই পঞ্চম দিনে হচ্ছেন করোনা নেগেটিভ।
সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার
ইভা হোমিও হল
বাইপাইল,আশুলিয়া,সাভার,ঢাকা।
গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬
মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন