অস্বস্তিকর পেটের পীড়ার হোমিওপেথীক চিকিৎসা
আইবিএস (অস্বস্তিকর পেটের পীড়া) কি ?
ইংরেজি পরিভাষায় পেটের পীড়া আইবিএস হচ্ছে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম। ইংরেজিতে
সিনড্রোম শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে একটি রোগের বিভিন্ন উপসর্গ বা লক্ষণের সমষ্টি।
তাই আইবিএসকে পেটের কয়েকটি উপসর্গ বা লক্ষণের সমন্বয়ে সংজ্ঞা হিসেবে ধরা হয়। এ রোগে
পেট অধিকতর স্পর্শকাতর হয় বলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল হয়ে থাকে। পাশ্চাত্য
দেশে প্রতি ১০ জনে অন্তত একজন মানুষ এ রোগে তার জীবদ্দশায় আক্রান্ত হয়ে
আইবিএস এর কারণ
আজ পর্যন্ত এ রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। অনেক কারণে এ রোগ হয় বলে চিকিৎসার
অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত কেবল উপসর্গের চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে
ভালো রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন কারণের মধ্যে খাদ্যনালির অতি সংবেদনশীলতা, পরিপাকতন্ত্রের
নাড়াচাড়ার অস্বাভাবিকতা বা অন্ত্র থেকে মস্তিষ্কে পাঠানো বার্তায় ত্রুটির কারণে আইবিএসের
লক্ষণগুলো দেখা দেয়। এছাড়া স্নায়ুর চাপ এবং দুঃশ্চিন্তা, খাদ্যাভ্যাস, অন্ত্রের প্রদাহ
এবং সংক্রমণ, হরমোন (নারীদের মাসিকচক্রের সঙ্গে), মাদক গ্রহণ, বংশগত কারণ, পেটের যে
কোনো অপারেশন ও দীর্ঘকাল ধরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের কারণে আইবিএসের সমস্যাকে বাড়িয়ে
দেয়।
উপসর্গ
পেটব্যথা, পেটফাঁপা, পায়খানার সঙ্গে আম যাওয়া, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া
ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমন্বয় ইত্যাদি। কোনো রোগীকে আইবিএস হিসেবে শনাক্ত করতে হলে এ লক্ষণগুলোতে
অন্তত দুটি লক্ষণ তিন মাস পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে হবে। এছাড়া অন্য যেসব লক্ষণ থাকতে
পারে, সেগুলো হল- পেটে অত্যধিক গ্যাস, পেটে অত্যধিক শব্দ, বুক জ্বালা, বদহজম, পায়খানা
সম্পূর্ণ না হওয়া, পেটে ব্যথা হলে টয়লেটে যাওয়ার খুব তাড়া, পেটব্যথা হলে পাতলা পায়খানা
হওয়া, শারীরিক অবসাদ ও দুর্বলতা, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, ঘন ঘন প্রস্রাবের
বেগ, নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক চলাকালীন কিংবা মিলনের সময় ব্যথা। যদি পায়খানার সঙ্গে
রক্ত পড়ে, শরীরের ওজন কমে যায় এবং হঠাৎ পায়খানার ঘনত্বের পরিমাণ কমে যায়, তবে এগুলো
অন্য কোনো রোগের এমনকি কোলোরেকটাল ক্যানসারের উপসর্গও নির্দেশ করে। এ অবস্থায় অতিসত্তর
কোনো গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে।
রোগ নির্ণয়
এ রোগ সাধারণত উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। রোগীর বয়স ও সুনির্দিষ্ট
লক্ষণের ওপর নির্ভর করে এক বা একাধিক পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। ৪০ বছরের কম বয়সী রোগীদের
ক্ষেত্রে লক্ষণের ওপর নির্ভর করে রোগ শনাক্ত করা যায়। বয়স ৪০ বছরের ওপরে হলে কিছু পরীক্ষার
প্রয়োজন হতে পারে। তবে আইবিএস রোগীর ক্ষেত্রে এসব পরীক্ষার ফলাফল স্বাভাবিক থাকবে।
পরীক্ষাগুলো হল-
* রক্ত পরীক্ষা * মল পরীক্ষা * পেটের এক্স-রে
* বেরিয়াম এনেমা * প্রক্টোসিগময়ডোস্কপি/ কোলোনোস্কপি
আইবিএস ঝুঁকিপূর্ণ রোগ নয়, সংক্রামক রোগও নয়, এমনকি বংশগত রোগও নয়। এ রোগ
অন্ত্রের ক্যানসার কিংবা অন্য কোনো ক্যানসারের কারণ নয়, এ কথাগুলো রোগীর চিকিৎসা শুরুর
আগে রোগীকে ভালো করে বুঝতে হবে। প্রথমেই রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে নিতে
হবে। তাহলেই এ রোগের চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যাবে। রোগীর উপসর্গ কমে না বলে রোগী ঘন
ঘন চিকিৎসক পরিবর্তন করেন। ঘন ঘন চিকিৎসক পরিবর্তন করলেই ভালো ফল লাভ করা যাবে না,
এ কথা রোগীকে বুঝতে হবে। বিদেশী সমীক্ষায় দেখা গেছে, আইবিএস রোগীদের মধ্যে ১০ শতাংশ
চিকিৎসকের কাছে যান। অধিকাংশ রোগী সামান্য ব্যবস্থায়ই উপশম লাভ করেন। তাদের ২৫ শতাংশ
রোগীর উপসর্গের কোনো পরিবর্তন হয় না। এমনকি তাদের অবস্থা আগের চেয়েও খারাপ হতে পারে।
বর্তমানে আইবিএসের চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। ডায়রিয়াপ্রবণ আইবিএস (IBS-D), কোষ্ঠকাঠিন্যপ্রবণ
আইবিএস (IBS-C) ও উভয় লক্ষণ থাকলে (IBS-M) সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। আইবিএস চিকিৎসায়
কোনো একক ওষুধ সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী নয়।
প্রথমত, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। দুধ ও দুধজাতীয় খাবার রোগীর উপসর্গ
বাড়িয়ে দেয়। তাই এগুলো পরিহার করতে হবে। খাবার খাওয়ার সময় লক্ষ্য করুন কোন খাবারগুলো
আপনার উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়, সেগুলো পরিহার করুন।
মানসিক চাপ কমাতে হবে। এমনকি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। ব্যায়াম
করতে পারেন অথবা মনকে আনন্দ আর প্রশান্তি দিতে পারে এমন কিছু করতে পারেন। মানসিক চাপ
কমানোর দিকে খেয়াল করা যেতে পারে। আইবিএসসির ক্ষেত্রে ইসবগুলের ভুসি ও অন্য আঁশ এ ক্ষেত্রে
কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
আইবিএস এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
হোমিওপ্যথিতে রোগের কারণ অনুসন্ধান করে আইবিএস এর লক্ষনভিত্তিক চিকিৎসা
প্রদান করলে অধিকাংশ রোগীকেই সম্পুর্নরূপে আরোগ্য করা সম্ভব৷ এক্ষেত্রে অনেক ওষুধের
প্রয়োজন হতে পারে যার মধ্যে Sulphur, Nat Sulph, Merc Sol, Podophylum, China,
Nux, Lycopodium, Arg nit ও Pulsatilla অন্যতম৷ এসব ঔষধ প্রয়োগে রোগীকে আরোগ্য ৷ তবে
ঔষধের মাত্রা নির্নয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত৷
মনেন রাখতে হবে আইবিএস ঝুঁকিপূর্ণ, সংক্রামক বা বংশগত রোগ নয় ৷ চিকিৎসা শুরুর আগে রোগীকে
তা ভালো করে বুঝাতে হবে। প্রথমেই রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে নিতে হবে।
তাহলেই এ রোগের চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যাবে।
রোগীদের যা মানতে হবে
* রোগীর উপসর্গ কমে না বলে রোগীরা ঘন ঘন চিকিৎসক পরিবর্তন করেন যা মোটেই ঠিক নয় এটি
করলেই ভালো ফল লাভ করা যাবে না, এ কথাটি রোগীকেও বুঝতে হবে।
* খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
* দুধ ও দুধজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
* লক্ষ করুন কোন খাবারগুলো আপনার উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়, সেগুলো পরিহার করুন৷
* মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
* ব্যায়াম করতে পারেন৷
ইসবগুলের ভুসি ও অন্যান্য আঁশ চাতীয় খাবার কার্যকরী ভূমিকা রাখে৷
আমার ফ্রী মোবাইল এপসটি ডাউনলোড করুন এবং আমার সকর লেখা আপডেট নিন নিয়মিত।
ডা. ইয়াকুব আলী সরকার
ইভা হোমিও হল
বাইপাইল,সাভার,ঢাকা।
মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮
গঃ রেজি নং ২৩৮৭৬।
প্রাথমিক কত পাওয়ার দিয়ে সুরু করবো,,,যানাবেন কি?
উত্তরমুছুন