জরুরী কযেকটি ঔষধের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি বা নির্বাচন গাইড।
আপনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত সঠিক একক সদৃশ ঔষধটি নির্বাচন করতে সক্ষম হতে
চান ?
রোগীর রোগের বর্ণনা শুনতে শুনতে কটি ঔষধ চিত্র আপনার স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে ?
এক একটি লক্ষণ বা রুব্রিকে রেপার্টরি করণ গুরুত্বপূর্ণ। একটি রোগীর লক্ষণ সমষ্টি বিশ্লেষণ
করলে দেখা যায় দশ/ বিশটি রুব্রিক পাবেন।তা হলে দেখা যাবে একটি রোগীর জন্য এক দেরশটি
ঔষধ বিশ্লেষণ করে একটি ঔষধ নির্বাচন করতে হবে। এই সঠিক ঔষধ নির্বাচন কৌশল সবাই সফর
ভাবে সম্পন্ন করতে পারেন না।ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়, রোগীর আদর্শ আরোগ্যের
জন্য এটা একটা বাধা। আমাদের দেশে এক এক জন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার নানা পেশার পাশাপাশি
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পেশায় আছেন। তাই তাদের সময় ব্যয় করে রেপার্টরি করণ করে রোগীর
সদৃশ ঔষধ নির্বাচন করতে চায় না। সেই সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক বন্ধুদের জন্য আমি অল্প
সময়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সব সময় ব্যবহৃত সদৃশ ঔষধদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি বা ঔষধ চিত্র
উপস্থাপন করেছি। অনেক অলস হোমিওপ্যাথিক বন্ধু গন এই কয়েকটি ঔষধ দিয়ে সকল প্রকার রোগীর
চিকিৎসা করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আপনি অবশ্যই তা করতে চেষ্টা করবেন না। আমি সংক্ষিপ্ত
বর্ণনার মাধ্যমে সবচেয়ে সহজ সরল উপস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ সদৃশ ঔষধদের চিত্র উপস্থাপন
করেছি।
সর্বাধিক জরুরী হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম সাথে প্রধান প্রধান লক্ষণসহ দেওয়া হলো।ছোট-খাটো
ব্যাপারে ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে যাওয়ার ঝামেলা থেকেও বেঁচে যাবেন।
Ø ১) একোনাইট নেপিলাস-
Aconite napellus
যে-কোন রোগই হউক না কেন (জ্বর, কাশি, ডায়েরিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, পেটব্যথা, হাঁপানি,
মাথাব্যথা, বুকেব্যথা, শ্বাসকষ্ট. বার্ড ফ্লু, বুক ধড়ফড়ানি প্রভৃতি), যদি হঠাৎ শুরু
হয় এবং শুরু থেকেই মারাত্মক রূপে দেখা দেয় অথবা দুয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটি মারাত্মক আকার
ধারণ করে, তবে একোনাইট ঔষধটি হলো তার এক নাম্বার ঔষধ। একোনাইটকে তুলনা করা যায় ঝড় তুফান,
টর্নেডোর সাথে প্রচণ্ড কিন্তু ক্ষণস্থায়ী।
একোনাইটের রোগী রোগের যন্ত্রণায় একেবারে অস্থির হয়ে পড়ে। রোগের উৎপাত এত বেশী হয় যে,
তাতে রোগী মৃত্যুর ভয়ে ভীত হয়ে পড়ে।রোগী ভাবে সে এখনই মরে যাবে।
Ø ২) ব্রাইয়োনিয়া এলবম-
Bryonia alba
ব্রায়োনিয়ার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো রোগীর ঠোট, জিহ্বা, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে থাকে,
প্রচুর পানি পিপাসা থাকে, রোগী অনেকক্ষণ পরপর একসাথে প্রচুর ঠান্ডা পানি পান করে, নড়াচড়া
করলে রোগীর কষ্ট বৃদ্ধি পায়, রোগীর মেজাজ খুবই বিগড়ে থাকে, কোষ্টকাঠিন্য দেখা দেয় অর্থাৎ
পায়খানা শক্ত হয়ে যায়, প্রলাপ বকার সময় তারা সারাদিনের পেশাগত কাজের কথা বলতে থাকে
অথবা বিছানা থেকে নেমে বাড়ি যাওয়ার কথা
বলে, শিশুদের কোলে নিলে তারা বিরক্ত হয়, মুখে সবকিছু তিতা লাগে। যে-কোন রোগই হউক না
কেন, যদি উপরের লক্ষণগুলোর অন্তত দু, তিনটি লক্ষণও রোগীর মধ্যে পাওয়া যায়, তবে ব্রাইয়োনিয়া সেই রোগ সারিয়ে দিবে। ব্রাইয়োনিয়া
ঔষধটি নিউমোনিয়ার জন্য আল্লাহ্র একটি বিরাট রহমত স্বরূপ। সাধারণত নিম্নশক্তিতে খাওয়ালে
ঘনঘন খাওয়াতে হয় কয়েকদিন কিন্তু (১০,০০০ বা ৫০,০০০ ইত্যাদি) উচ্চশক্তিতে খাওয়ালে দুয়েক
ডোজই যথেষ্ট।
Ø ৩) রাস টক্স-
Rhus toxicodendron
রাস টক্সের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো প্রচণ্ড অস্থিরতা, রোগী এতই অস্থিরতায় ভোগে যে
এক পজিশনে বেশীক্ষণ স্থির থাকতে পারে না, রোগীর শীতভাব এমন বেশী যে তার মনে হয় কেউ
যেন বালতি দিয়ে তার গায়ে ঠান্ডা পানি
ঢালতেছে, নড়াচড়া করলে (অথবা শরীর টিপে দিলে) তার ভালো লাগে অর্থাৎ রোগের কষ্ট কমে যায়,
স্বপ্ন দেখে যেন খুব পরিশ্রমের কাজ করতেছে। বর্ষাকাল, ভ্যাপসা আবহাওয়া বা ভিজা বাতাসের
সময়কার যে-কোন জ্বরে (বা অন্যান্য রোগে) রাস টক্স এক নাম্বার ঔষধ। রাস টক্স খাওয়ার
সময় ঠান্ডা পানিতে গোসল বা ঠান্ডা পানিতে গামছা ভিজিয়ে শরীর মোছা যাবে না। বরং এজন্য
কুসুম কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। কেননা ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে রাস টক্সের
একশান নষ্ট হয়ে যায়। (* ব্রায়োনিয়া
এবং রাস টক্সের প্রধান দুটি লক্ষণ মনে রাখলেই চলবে ; আর তা হলো – নড়াচড়া করলে ব্রায়োনিয়ার
রোগ বেড়ে যায় এবং রাস টক্সের রোগ হ্রাস পায় / কমে যায়।)
Ø ৪) লাইকোপোডিয়াম-
Lycopodium clavatum
লাইকোপোডিয়ামের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো রোগের মাত্রা বিকাল ৪-৮টার সময় বৃদ্ধি পায়,
এদের রোগ ডান পাশে বেশী হয়, রোগ ডান পাশ থেকে বাম
পাশে যায়, এদের পেটে প্রচুর গ্যাস হয়, এদের সারা বৎসর প্রস্রাবের বা হজমের সমস্যা লেগেই
থাকে, এদের দেখতে তাদের বয়সের চাইতেও বেশী বয়ষ্ক মনে হয়, এদের স্বাস্থ্য খারাপ কিন্তু
ব্রেন খুব ভালো,এরা খুবই সেনসিটিভ এমনকি ধন্যবাদ দিলেও কেঁদে ফেলে ইত্যাদি ইত্যাদি।
উপরের লক্ষণগুলোর দু’তিনটিও কোন রোগীর মধ্যে থাকলে লাইকোপোডিয়াম তার যে-কোন রোগ (জ্বর,
কাশি, ডায়েরিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, পেটব্যথা, হাঁপানি, মাথাব্যথা, বুকেব্যথা, শ্বাসকষ্ট,
বার্ড ফ্লু, বুক ধড়ফড়ানি, চুলপড়া, ধ্বজভঙ্গ প্রভৃতি) সারিয়ে দেবে।
Ø ৫) বেলেডোনা-
Belladonna
তিনটি লক্ষণের উপর ভিত্তি করে বেলেডোনা ঔষধটি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে, যথা-উত্তাপ, লাল
রঙ এবং জ্বালা-পোড়া ভাব। যদি শরীরে বা আক্রান্ত স্থানে উত্তাপ বেশী থাকে, যদি আক্রান্ত
স্থান লাল হয়ে যায় (যেমন- মাথা ব্যথার সময় মুখ লাল হওয়া, পায়খানার সাথে টকটকে লাল রক্ত
যাওয়া), শরীরে জ্বালা, পোড়াভাব থাকে, রোগী ভয়ঙ্কর সব জিনিস দেখে, ভয়ে পালাতে চেষ্টা
করে, অনেক সময় মারমুখী হয়ে উঠে ইত্যাদি ইত্যাদি। জ্বরের সাথে যদি রোগী প্রলাপ বকতে
থাকে, তবে বেলেডোনা তাকে উদ্ধার করবে নিশ্চিত। উপরের লক্ষণগুলো কোন রোগীর মধ্যে পাওয়া
গেলে যে-কোন রোগে (জ্বর-কাশি-ডায়েরিয়া- আমাশয়- রক্তআমাশয়- পেটব্যথা- মাথাব্যথা- বুকেব্যথা-
শ্বাসকষ্ট- বার্ড ফ্লু-বুক ধড়ফড়ানি প্রভৃতি) বেলেডোনা প্রয়োগ করতে পারেন।
Ø ৬) আর্সেনিক এলবম-
Arsenic album
আর্সেনিকের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো রোগীর মধ্যে প্রচণ্ড অস্থিরতা (অর্থাৎ রোগী এক
জায়গায় বা এক পজিশনে বেশীক্ষণ থাকতে পারে না। এমনকি গভীর ঘুমের মধ্যেও সে নড়াচড়া করতে
থাকে।, শরীরের বিভিন্ন স্থা নে ভীষণ জ্বালা-পোড়া ভাব, অল্প সময়ের মধ্যেই রোগী দুর্বল-কাহিল-নিস্তেজ
হয়ে পড়ে, রোগীর বাইরে থাকে ঠান্ডা কিন্তু ভেতরে থাকে জ্বালা-পোড়া, অতি মাত্রায় মৃত্যু
ভয়, রোগী মনে করে ঔষধ খেয়ে কোন লাভ নেই- তার মৃত্যু নিশ্চিত, গরম পানি খাওয়ার জন্য
পাগল কিন্তু খাওয়ার সময় খাবে দুয়েক চুমুক। বাসি-পচাঁ-
বিষাক্ত খাবার খেয়ে যত মারাত্মক রোগই হউক না কেন, আর্সেনিক খেতে দেরি করবেন না। ফল-ফ্রুট
খেয়ে (ডায়েরিয়া, আমাশয়, পেট ব্যথা ইত্যাদি) যে-কোন রোগ হলে আর্সেনিক হলো তার এক নম্বর
ঔষধ।
Ø ৭) আর্নিকা মন্টেনা-
Arnica montana
যে-কোন ধরনের আঘাত, থেতলানো, মচকানো, মোচড়ানো, ঘুষি, লাঠির আঘাত বা উপর থেকে পড়ার কারণে
ব্যথা পেলে আর্নিকা খেতে হবে। শরীরের কোন একটি অঙ্গের বেশী ব্যবহারের ফলে যদি তাতে
ব্যথা শুরু হয়, তবে আর্নিকা খেতে ভুলবেন না। আক্রান্ত স্থানে এমন তীব্র ব্যথা থাকে
যে, কাউকে তার দিকে আসতে দেখলেই সে ভয় পেয়ে যায় (কারণ ধাক্কা লাগলে ব্যথার চোটে তার
প্রাণ বেরিয়ে যাবে)।রোগী ভীষণ অসুস্থ হয়েও মনে করে তার কোন অসুখ নেই, সে ভালো আছে।
উপরের লক্ষণগুলোর কোনটি থাকলে যে-কোন রোগে আর্নিকা প্রয়োগ করতে পারেন।
Ø ৮) মার্ক সল-
Mercurius solubilis
মার্ক সল ঔষধটির প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো প্রচুর ঘাম হয় কিন্তু রোগী আরাম পায় না, ঘামে
দুর্গন্ধ বা মিষ্টি গন্ধ থাকে, কথার বিরোধীতা সহ্য করতে পারে না, ঘুমের মধ্যে মুখ থেকে
লালা ঝরে, পায়খানা করার সময় কোথানি, পায়খানা করেও মনে হয় আরো রয়ে গেছে, অধিকাংশ রোগ
রাতের বেলা বেড়ে যায়। রোগী ঠান্ডা পানির জন্য পাগল।ঘামের কারণে যাদের কাপড়ে হলুদ দাগ
পড়ে যায়, তাদের যে-কোন রোগে মার্ক সল উপকারী।এটি আমাশয়ের এক নম্বর ঔষধ। উপরের লক্ষণগুলো
থাকলে যে-কোন রোগে মার্ক সল প্রয়োগ করতে পারেন।
Ø ৯) জেলসেমিয়াম-
Gelsemium sempervirens
জেলসিমিয়ামের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো রোগীর মধ্যে ঘুমঘুম ভাব থাকে বেশী, রোগী অচেতন-অজ্ঞান-বেহুশের
মতো পড়ে থাকে, দেখা যাবে গায়ে প্রচণ্ড জ্বর অথচ রোগী নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে, মাথা ঘুড়ানি
থাকে, শরীর ভারভার লাগে, মাত্রাতিরিক্ত দুর্বলতার কারণে রোগী নড়াচড়া করতে পারে না এবং
একটু নড়াচড়া করতে গেলে শরীর কাঁপতে থাকে, ওপর থেকে পড়ে যাওয়ার ভয় এবং হৃৎপিন্ড বন্ধ
হয়ে যাওয়ার ভয়, সাহসহীনতা,শরীরের জোর বা মনের জোর কম হওয়া, ইত্যাদি লক্ষণ আছে। পরীক্ষার
বা ইন্টারভিউর পূর্বে বেশী উৎকন্ঠিত হলে Argentum nitricum অথবা Gelsemium (শক্তি ৩০)
এক মাত্রা খেয়ে নিতে পারেন।
Ø ১০)হিপার সালফ-
Hepar sulph
হিপার সালফের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো এরা সাংঘাতিক সেনসেটিভ
(over-sensitiveness), এতই সেনসেটিভ যে রোগাক্রান্ত স্থানে সামান্য স্পর্শও সহ্য করতে
পারে না, এমনকি কাপড়ের স্পর্শও না।কেবল মানুষের বা কাপড়ের স্পর্শ নয়, এমনকি ঠান্ডা
বাতাসের স্পর্শও সহ্য করতে পারে না। সাথে সাথে শব্দ ( গোলমাল) এবং গন্ধও সহ্য করতে
পারে না। হিপারের শুধু শরীরই সেনসেটিভ নয়,সাথে সাথে মনও সেনসেটিভ। অর্থাৎ মেজাজ খুবই
খিটখিটে। ইহা সাধারণত ফোড়া,ঘা,ক্ষত ইত্যাদি অর্থাৎ ইনফেকশান দূর করার জন্য এন্টিবায়োটিক
হিসাবে বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে।তবে লক্ষণ থাকলে যে-কোন রোগে হিপার প্রয়োগ করতে পারেন।
Ø ১১)ফসফরাস-
Phosphorus
ফসফরাসের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো এই রোগীরা খুব দ্রুত লম্বা হয়ে যায় (এবং এই কারণে
হাঁটার সময় সামনের দিকে বেঁকে যায়), অধিকাংশ সময় রক্তশূণ্যতায় ভোগে, রক্তক্ষরণ হয় বেশী, অল্প একটু কেটে গেলেই
তা থেকে অনেকক্ষণ রক্ত ঝরতে থাকে,রোগী বরফের মতো কড়া ঠান্ডা পানি খেতে চায়, মেরুদন্ড থেকে মনে হয় তাপ বেরুচ্ছে, একা থাকতে ভয়
পায়, হাতের তালুতে জ্বালাপোড়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে যে-কোন রোগে ফসফরাস প্রয়োগ করতে
হবে।
Ø ১২) নাক্স ভুমিকা-
Nux vomica
যারা অধিকাংশ সময়ে পেটের অসুখে, বদহজমে ভোগে, বদমেজাজী, ঝগড়াটে, বেশীর ভাগ সময় শুয়ে
বসে কাটায়, কথার বিরোধীতা সহ্য করতে পারে না এবং অল্প শীতেই কাতর হয়ে পড়ে, এটি তাদের
( জ্বর- কাশি- ডায়েরিয়া- আমাশয়- রক্তআমাশয়- পেটব্যথা- মাথাব্যথা- বুকেব্যথা- শ্বাসকষ্ট
প্রভৃতি) ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। অধিকাংশ রোগ রাতের বেলা বেড়ে যায়।পান-সিগারেট-মদ-গাজা-ফেনসিডিল-হিরোইন
দীর্ঘদিন সেবনে শরীরের যে ক্ষতি হয়, নাক্স ভমিকা তাকে পুষিয়ে দিতে পারে।পাশাপাশি এটি
মদ-ফেনসিডিলের নেশা ছাড়তে ব্যবহার করতে পারেন।লক্ষণ মিলে গেলে এটি জ্বর,আমাশয়, পেটব্যথা,
নিদ্রাহীনতা, কোষ্টকাঠিন্য,গ্যাস্ট্রিক আলসার,হিস্টেরিয়া,খিচুনি,ধনুস্টংকার, পাইলস,
দুর্বলতা, ক্ষুধাহীনতা, প্যারালাইসিস, ধ্বজভঙ্গ
বা যৌন দুর্বলতা প্রভৃতি রোগের একটি শ্রেষ্ট ঔষধ গণ্য হতে পারে।
Ø ১৩) পালসেটিলা-
Pulsatilla pratensis
পালসেটিলার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো গলা শুকিয়ে থাকে কিন্তুকোন পানি পিপাসা থাকে না,ঠান্ডা
বাতাস-ঠান্ডা খাবার-ঠান্ডা পানি পছন্দ করে, গরম-আলো-বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে রোগীনী বিরক্ত
বোধ করে ইত্যাদি ইত্যাদি। আবেগপ্রবন, অল্পতেই কেঁদে ফেলে এবং যত দিন যায় ততই মোটা হতে
থাকে, এমন মেয়েদের ক্ষেত্রে পালসেটিলা ভালো কাজ করে।এসব লক্ষণ কারো মধ্যে থাকলে যে-কোন
রোগে পালসেটিলা খাওয়াতে হবে। বাতের ব্যথা ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করলে পালসেটিলা খেতে
হবে (যেমন- সকালে এক জায়গায় ব্যথা তো বিকালে অন্য জায়গায়।)।মাসিক বন্ধ থাকলে পালসেটিলা
সেটি চালু করতে পারে।ঘি-চবি জাতীয় খাবার খেয়ে যে-কোন রোগ হলে পালসেটিলা অবশ্যই খাবেন।এটি
নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। গর্ভবতী মেয়েদের প্রায় সকল সমস্যাই
পালসেটিলা দূর করে দিতে পারে। প্রসব ব্যথা বাড়িয়ে দিয়ে পালসেটিলা প্রসবকাজ দ্রুতগতিতে
সম্পন্ন করতে পারে। পালসেটিলা বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে পারে। এমনকি গর্ভস্থশিশুর পজিশন
ঠিক না থাকলে তাও ঠিক করে দেওয়ার মতো অলৌকিক ক্ষমতা পালসেটিলার আছে।
Ø ১৪)ক্যান্থারিস-
জ্বালা-পোড়া এবং ছিড়ে ফেলার মতো ব্যথা হলো ক্যান্থারিসের প্রধান লক্ষণ। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
এবং ঘনঘন প্রস্রাবের সমস্যায় ইহা একটি যাদুকরী ঔষধ।ভীষণ জ্বালাপোড়া থাকলে যে-কোন রোগে
ক্যান্থারিস ব্যবহার করতে পারেন। এটি জলাতঙ্ক রোগের একটি শ্রেষ্ট ঔষধ। এটি যৌন উত্তেজনা
বৃদ্ধি করে থাকে ভীষণভাবে। কোন জায়গা পুড়ে গেলে একই সাথে খাওয়ান এবং পানির সাথে মিশিয়ে
পোড়া জায়গায় লাগান। এটি পেটের মরা বাচ্চা, গর্ভফুল বের করে দিতে পারে এবং বন্ধ্যাত্ব
নির্মূল করতে পারে।
Ø ১৫)কোলোসিন্থ-
পেটের ব্যথা যদি শক্ত কোন কিছু দিয়ে পেটে চাপ দিলে অথবা সামনের দিকে বাঁকা হলে কমে
যায়, তবে কলোসিন্থআপনাকে সেই ব্যথা থেকে মুক্ত করবে।কলোসিনে’র ব্যথা ছুরি মারার মতো
খুবই মারাত্মক ধরণের অথবা মনে হবে যেন দুটি পাথর দিয়ে পেটের নাড়ি-ভূড়িগুলোকে কেউ পিষতেছে।
যে-কোন রোগের সাথে যদি এরকম চিড়িক মারা পেট ব্যথা থাকে, তবে কলোসিন্থেসেই রোগ সেরে যাবে (হউক তা ডায়েরিয়া-আমাশয় অথবা
টিউমার)।রেগে যাওয়া, অপমানিত হওয়া,ঝগড়া-ঝাটি, ফল-ফ্রুট খাওয়া, ঠান্ডা পানি পান করা
ইত্যাদি কারণে ডায়েরিয়া হলে তাতে কলোসিন্থ খেতে হবে।
Ø ১৬)থুজা অক্সিডেন্টাল-
Thuja occidentalis
সোরিক ,সিফিলিটিক ও সুগভীর সাইকোটিক।তিনটি দোষের সমন্বয়যুক্ত এই ঔষধটি দোষঘ্ন চিকিৎসা
ক্ষেত্রে একটি সুদৃঢ স্তম্ভ বিশেষ।সাইকোসিস দোষের উপরই ইহার ক্রিয়া সর্বাধিক,কাজেই
সাইকোসিস দোষজ ঔষধসমূহের মধ্যে থুজা শীর্ষমণিরুপে অভিহিত হইবার যোগ্য।সাইকোসিস দোষজাত
যত প্রকার মনোবৃত্তি আছে ,তাহার সমস্ত ইহাতে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। মানব মনের বুদ্ধিবৃত্তির
সুদৃঢ লৌহকপাটটিকে বিপর্যস্ত করিয়া নানা প্রকার কাল্পনিক ধারনা ও ভ্রান্ত অনুভূতি সৃষ্টি
করাই ইহার মুখ্য উদ্দেশ্য এবং ইহাই থুজার বৈশিষ্ট্যজনক মানসিক লক্ষণ। সংক্ষিপ্ত চিত্র।
সাইকোটিক শ্রেণীভূক্ত ঔষধসমূহের মধ্যে অনুভবাত্বক লক্ষণে থুজাই শ্রেষ্টত্বই সর্বাধিক।
বহু প্রকার অবান্তর ও অসত্য অনুভূতিই ইহাতে বর্তমান।থুজার সমস্যাদৃশ্যযুক্ত লক্ষণসমুহ
চাপা দেওয়ার ফলে সাইকোসিস দোষযুক্ত বহু রোগীই পাগল হয়ে থাকে।নানা প্রকার জান্তব বিষ
এবং পেয়াজ ,রসুন ইত্যাদির কুফলে থুজার দ্বারা প্রতিষেধিত হয়, আবার ঐ বস্তগুলির দ্বারাই
থুজার ক্রিয়াও নষ্ট হয় কাজেই ঐ সকল বস্তুসমুহ থুজার সহিত প্রতিষেধক ও শক্রতাভাবাপন্ন
এই দুই প্রকার সমন্ধেই আবদ্ধ, একথা মনে রাখিতে হয়।যে-কোন টিকা(বিসিজি, ডিপিটি, পোলিও,
এটিএস ইত্যাদি) নেওয়ার কারণে জ্বর আসলে অথবা অন্য যে-কোন (মামুলি অথবা মারাত্মক ধরণের)
রোগ হলে সেক্ষেত্রে থুজা একটি অতুলনীয় ঔষধ।যে-কোন টিকা নেওয়ার সময় পাশাপাশি রোজ তিনবেলা
করে থুজা খান, তাহলে সেই টিকার ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে পারবেন। জ্বরের
মধ্যে কেউ যদি ‘উপর থেকে পড়ে যাওয়ার’ স্বপ্ন দেখে, তবে সেটি যেই নামের জ্বরই হোক না
কেন, থুজা তাকে নিরাময় করে দিবে। আঁচিল বা মেঞ্জের এক নম্বর ঔষধ হলো থুজা। গনোরিয়া
রোগে এবং মাসিকের সময় ব্যথা হলে থুজা সবচেয়ে ভালো ঔষধ। প্রস্রাবের অধিকাংশ সমস্যা থুজায়
নিরাময় হয়ে যায়।নরম টিউমার ইহাতে আরোগ্য হয়। যে-সব রোগ বর্ষাকালে বা ভ্যাপসা আবহাওয়ার
সময় বৃদ্ধি পায়, সে-সব রোগে থুজা খান।
Ø ১৭)হাইপেরিকাম-
Hypericum perforatum
যে-সব আঘাতে কোন স্মায়ু ছিড়ে যায়, তাতে খুবই মারাত্মক ব্যথা শুরু হয় যা নিবারণে হাইপেরিকাম
খাওয়া ছাড়া গতি নেই। শরীরের সপর্শকাতর স্থানে (যেমন- ব্রেন বা মাথা, মেরুদন্ড, (পাছার
নিকটে) কণ্ডার হাড়ে, আঙুলের মাথায়, অণ্ডকোষে ইত্যাদিতে} আঘাত পেলে বা কিছু বিদ্ধ হলে,
তাতে হাইপেরিকাম খেতে দেরি করবেন না।আঘাত পাওয়ার স্থান থেকে প্রচণ্ড ব্যথা যদি চারদিকে
ছড়াতে থাকে বা খিঁচুনি দেখা দেয় অথবা শরীর ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে যায় (ধনুষ্টঙ্কার),তবে
হাইপেরিকাম ঘনঘন খাওয়াতে থাকুন। তবে যে-সব ক্ষেত্রে পেশী এবং স্নায়ু দুটোই আঘাত প্রাপ্ত
হয়েছে বলে মনে হয়, তাতে আর্নিকা এবং হাইপেরিকাম একত্রে মিশিয়ে খেতে পারেন) হাইপেরিকাম
খেতে পারলে আর এটিএস ইনজেকশন নেওয়ার কোন দরকার হবে না।
Ø ১৮)কেমোমিলা-
Chamomilla
যদি ব্যথার তীব্রতায় কোন রোগী দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়ে, তার ভদ্রতাজ্ঞানও লোপ
পেয়ে যায়, সে ডাক্তার বা নার্সকে পযর্ন্ত গালাগালি দিতে থাকে; তবে তাকে ক্যামোমিলা
খাওয়াতে হবে।ক্যামোমিলা হলো অভদ্র রোগীদের ঔষধ।
স্কুলের শিক্ষকদের হাতে শিশুরা মার খাওয়ার ফলে, অপমানিত হওয়ার কারণে, শারীরিক-মানসিক
নিরযাতনের ফলে কোন রোগ হলে ক্যামোমিলা খাওয়াতে ভুলবেন না। যারা ব্যথা একদম সহ্য করতে
পারে না, ক্যামোমিলা হলো তাদের ঔষধ। যে-সব মেয়েরা প্রসব ব্যথায় পাগলের মতো হয়ে যায়,
তাদেরকে এটি খাওয়াতে হবে। গরম কিছু খেলে যদি দাঁত ব্যথা বেড়ে যায়, তবে ক্যামোমিলা প্রযোজ্য।
ডায়েরিয়া বা আমাশয়ের পায়খানা থেকে যদি পঁচা ডিমের গন্ধ আসে, তবে এটি খাওয়াতে হবে। শিশুদের
দাঁত ওঠার সময়ে পেটের অসুখ হলে ক্যামোমিলা খাওয়াবেন। কোন শিশু যদি সারাক্ষণ কোলে ওঠে
থাকতে চায়, তবে তাকে যে-কোন রোগে ক্যামোমিলা খাওয়ালে তা সেরে যাবে।
Ø ১৯)প্লান্টেগো মেজোরা
Plantago Major
দাঁত, কান এবং মুখের ব্যথায় প্লানটাগো মেজর এমন চমৎকার কাজ করে যে, তাকে এক কথায় যাদু
বলাই যুক্তিসঙ্গত।একদিন পত্রিকায় দেখলাম, একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকের দাঁতব্যথা সারাতে
না পেরে ডেন্টিস্টরা শেষ পযর্ন্ত একে একে তাঁর ভালো ভালো চারটি দাঁতই তুলে ফেলেছেন।আহা
! বেচারা ডেন্টিস্টরা যদি প্লানটাগো’র গুণের কথা জানত, তবে প্রবীণ এই সাংবাদিকের দাঁতগুলো
শহীদ হতো না।
Ø ২০)লিডাম পাল-
Ledum palustre
সূচ, আলপিন,তারকাটা,পেরেক,টেটা প্রভৃতি বিদ্ধ হলে ব্যথা কমাতে এবং ধনুষ্টঙ্কার / খিচুনি
ঠেকাতে লিডাম ঘনঘন খাওয়ান। পক্ষান্তরে ধনুষ্টঙ্কার দেখা দিলে বা আক্রান্ত স্থান থেকে
তীব্র ব্যথা শরীরের বিভিন্ন দিকে যেতে থাকলে
এবং শরীর ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে গেলে হাইপেরিকাম (Hypericum perforatum) ঘনঘন খাওয়াতে
থাকুন। চোখে ঘুষি বা এই জাতীয় কোনো আঘাত লাগলে লিডাম এক ঘণ্টা পরপর খেতে থাকুন। ইদুর
এবং পোকার কামড়ে লিডাম খেতে হবে।এটি উকুনের একটি শ্রেষ্ট ঔষধ, তেল বা পানির সাথে মিশিয়ে
ব্যবহার করতে পারেন। বাতের ব্যথায় উপকারী বিশেষত যাদের পা দুটি সব সময় ঠান্ডা থাকে।
আঘাতের স্থানে কালশিরা পড়া ঠেকাতে অথবা কালশিরা পড়লে তা দূর করতে লিডাম খেতে পারেন।
Ø ২১)ক্যাম্ফোরা- Camphora
ক্যাম্ফরা হলো শেষ মুহূর্তের ঔষধ। কোন রোগের কারণে অথবা কোন দুর্ঘটনার ফলে যদি কেউ
মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তবে তাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে ঘনঘন ক্যাম্ফরা
খাওয়াতে থাকুন। যখনই কেউ অজ্ঞান হয়ে যায়, হাত-পা বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যায় কিন্তুতারপরও
সে কাপড়-চোপড় গায়ে দিতে চায় না, রক্তচাপ কমে যায়, কপালে ঠান্ডা ঘাম দেখা দেয়, নিঃশ্বাস
গভীর হয়ে পড়ে, তখন বুঝতে হবে তার মৃত্যু খুবই নিকটে। সেক্ষেত্রে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে
ঘনঘন ক্যামফরা খাওয়াতে থাকুন। অন্যকোন হোমিও ঔষধে রিয়েকশন করলে ক্যামফরা খেতে থাকুন
; কেননা এটি শতকরা নব্বই ভাগ হোমিও ঔষধের
একশান নষ্ট করে দিতে পারে।হঠাৎ কোনো কারণে হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে
বা অত্যধিক বুক ধড়ফড়ানি শুরু হলে ক্যাম্ফরা পাঁচ মিনিট পরপর খাওয়াতে থাকুন।এটি পুরুষদের
যৌনশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
Ø ২২)টিক্রিয়াম এম-
Teucrium Marum verum
টিউক্রিয়াম হলো সবচেয়ে নিরাপদ এবং কাযর্কর ক্রিমির ঔষধ। ছেলে-বুড়ো সকলেই এটি খেতে পারেন। রোজ দুই/তিন বার করে দুই/তিন দিন খাওয়া উচিত।
নাক বন্ধ হয়ে থাকলে, নাকের পলিপ (নরম টিউমার) এবং জরায়ুর পলিপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে টিউক্রিয়াম
প্রযোজ্য।
Ø ২৩)এলিয়াম সিপা
- Allium cepa
পেয়াজের রস থেকে তৈরী করা এলিয়াম সেপা নামক ঔষধটি, ক্লার্কের মতে, হোমিওপ্যাথিতে সর্দির
সবচেয়ে ভালো ঔষধ।সর্দির সাথে জ্বর, মাথাব্যথা অথবা স্বরভঙ্গ থাকলেও এটি খেতে পারেন।
Ø ২৪)ইউপ্যাটোরিয়াম-
Eupatorium perfoliatum
ইউপেটোরিয়াম পারফো নামক ঔষধটি প্রধানত ডেঙ্গু জ্বরে ব্যবহৃত হয়। তবে যে-কোন জ্বরে এটি
খেতে পারেন যদি তাতে ডেঙ্গু জ্বরের মতো প্রচণ্ড
শরীর ব্যথা থাকে। জ্বরের মধ্যে যদি শরীরে এমন প্রচণ্ড ব্যথা থাকে যেন মনে হয় কেউ শরীরের
সমস্ত হাড় পিটিয়ে গুড়োঁ করে দিয়েছে।পানি বা খাবার যাই পেটে যায় সাথে সাথে বমি হয়ে যায়।আইসক্রীম
বা ঠান্ডা পানি খেতে ইচ্ছে হয়।রোগী খুবই অস্থির থাকে, এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসতে পারে
না।ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সিজনাল ভাইরাস জ্বরেও যদি প্রচণ্ড শরীর ব্যথা থাকে তবে ইউপেটোরিয়াম
খেতে হবে।
Ø ২৫)ক্যালকেরিয়া ফস-
Calcarea Phosphorica
ক্যালকেরিয়া ফস শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য পৃথিবীর সেরা একটি ভিটামিন।মায়ের পেট থেকে শুরু
করে মৃত্যু পযর্ন্ত এটি খেয়ে যাওয়া উচিত। সাত দিন বা পনের দিন পরপর একমাত্রা করে খাওয়া
উচিত। গর্ভকালীন সময়ে খেলে আপনার সন্তানের হাড়, দাঁত, নাক, চোখ,ব্রেন ইত্যাদির গঠন
খুব ভালো হবে এবং আপনার সন্তান ঠোক কাটা, তালু কাটা, হাড় বাঁকা,খোঁজা, বামন, বুদ্ধি
প্রতিবন্ধি প্রভৃতি দোষ নিয়ে জন্মনোর হাত থেকে রক্ষা পাবে। এটি শিশুদের নিয়মিত খাওয়ালে
তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং অসুখ-বিসুখ কম হবে। যে-সব শিশুদের মাথার খুলির হাড়
ঠিক মতো জোড়া লাগেনি, তাদেরকে অবশ্যই ক্যালকেরিয়া ফস
খাওয়াতে হবে। নাকের, পায়খানার রাস্তার এবং জরায়ুর পলিপ বা নরম টিউমার এই ঔষধে দুর হয়ে
যায়। হাড় ভেঙে গেলে ক্যালকেরিয়া ফস দ্রুত জোড়া লাগিয়ে দেয়। কোন শিশু বিরাট বড় মাথা নিয়ে জন্মালে (hydrocephalus) অথবা
জন্মের পরে মাথা বড় হয়ে গেলে, ক্যালকেরিয়া ফস তার এক নম্বর ঔষধ। রোগের কথা চিন্তা করলে যদি রোগের
উৎপাত বেড়ে যায়, তবে তাতে এই ঔষধ প্রযোজ্য।এটি টনসিলের সমস্যা এবং মুখের ব্রণের সেরা
ঔষধ।যাদের ঘনঘন সর্দি লাগে, তারা অবশ্যই এই ঔষধ খাবেন। ডায়াবেটিসের এটি একটি শ্রেষ্ট
ঔষধ। শিশুদের দাঁত ওঠার সময় অবশ্যই ক্যালকেরিয়া ফস খাওয়ানো উচিত। এটি নারী পুরুষদের
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
Ø ২৬) কোকুলাস ইন্ডিকা-
Cocculus Indicus
ককুলাস হলো মাথা ঘুরানির এক নম্বর ঔষধ। ককুলাসের প্রধান লক্ষণ হলো মাথার ভেতরটা ফাঁপা
বা হালকা মনে হয়। সড়ক-রেল-সমুদ্র ভ্রমণজনিত সমস্যায় (মাথাঘুরানি-বমিবমি ভাব ইত্যাদিতে)
এটি খেতে পারেন। ঠিক মতো ঘুম না হলে অথবা রাত জেগে কাজ করার ফলে পরদিন যে-সব সমস্যা
হয়, তাতে ককুলাস সবচেয়ে ভালো কাজ করে। তেল বা পানির সাথে মিশিয়ে চুলে মেখে কিছুক্ষণ
পর চুল ধুয়ে ফেললে অথবা পাতলা চিরুনি দিয়ে আচড়ালে উকুঁন সাফ হয়ে যাবে।
Ø ২৭) এব্রোটেনাম
এরা অত্যন্ত নিষ্ঠুর টাইপের। এর বাচ্চারা পোকা মাকড় টিপেটিপে হত্যা করে আনন্দ পায়।
পা দুটো লতার মতো চিকন হয়ে যায়। নাভী শুকায় না। নিমাঙ্গের শীর্ণতা, নিষ্ঠুরতা, হত্যায়
আনন্দ এবং নাভীর ক্ষত সহজে না শুকানো সিফিলিটিক মায়াজমের ইঙ্গিত বহন করে। ঔষধটি প্রয়োগে
সিফিলিটিক প্রবণতা দূর হয়। এটি অত্যন্ত গভীর ক্রিয়াশীল ঔষধ। একবার প্রয়োগ করলে আর প্রয়োগ
করার প্রয়োজন পড়ে না। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এর লক্ষণগুলো বছরের পর বছর ধরে চক্রাকারে
চলতে থাকে।
Ø ২৮) Syphilinum -সিফিলিনাম
সোরিক , সাইকোটিক , সুগভীর সিফিলিটিক ও টিউবারকুলার । ইহা নোসোড শ্রণীভূক্ত ঔষধসমূহের
অন্যতম একটি সুগভীর এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ।তরুন সিফিলিসের ক্ষত অসদৃশ চিকিৎসায় বা বাহ্য
ঔষধ প্রয়োগে চাপা দেওয়ার ফলে, শরীরে যে দোষের সুচনা হয় তাহাতে এবং বংশগত সিফিলিস দোষ
দুষ্ট শরীরের উপর ইহার কার্যকারীতাই সর্বাধিক । ঐ প্রকার দোষযুক্ত ব্যক্তির বার বার
গলদেশ সংক্রান্ত নানা প্রদাহ, চর্মপীড়া , গ্লান্ড স্ফীতি , অস্হিবাদ ,ক্ষত প্রবনণতা
, গুহ্যদ্বারের কাটা ছেড়া অবস্হা ও যে কোনও নামের পীড়া ইত্যাদি ভোগ হওয়া সত্বেও যখন
কোনো একটি নিদিষ্ট ঔষধের হ্রাসবূদ্ধি পরিস্ফুট হয় না , তখনই ইহার ক্ষেত্র আসিয়াছে বুঝিতে
হইবে। অবস্হা যাইহোক, সিফিলিনাম প্রয়োগ করিতে হইলে , সর্বাগ্রে এ কথাই স্বরণ রাখিতে
হইলে যে ,এই দোষটি মুলতঃ বুদ্ধির তীক্ষতা কমাইয়া দেয় ও ক্রমে স্মৃতিশক্তির বিপর্যয়
সাধন করে ।
Ø ২৯) সিকেলি কর/ Secale
cor
সিকেলি করের রোগীর অত্যন্ত জ্বালা, অত্যন্ত গরম কাতরতা, শীর্ণকায়া মৃত্ মানুষের মতো ঠান্ডা, জরায়ুর ও মলদ্বারের শিথিলতা, ঠাণ্ডা পাওয়ার ব্যাকুলতা, আবরণ সহ্য হয় না, হাতের আঙুল পিছনদিকে বেকে যাওয়া ও মুষ্টিবদ্ধ হাত আক্ষেপ অবস্থায় পর্যায়ক্রমে, উন্মাদ অবস্থায় কামড়াইতে যাওয়া ইত্যাদি।
Ø ৩০) নেট্রাম
কার্বনিকাম /Natrum carbonicum
নেট্রাম কার্ব একটি সুগভীর সোরিক ও সাইকোটিক ঔষধ। নেট্রাম কার্বের রোগীর মনটি
অতিশয় বিমর্ষ ও ক্রোধপূর্ণ সাথে ব্যাকুলতা, উৎকন্ঠা, প্রীয় আপন জনের প্রতিও
উদাসীনতা রোগীর মাঝে চঞ্চলতা ভাবটি বিদ্যমান এবং সঞ্চালনায় আরাম বোধ করে। কোন
কিছুতেই সে মনোযোগের সাথে করতে পারে না।
অলস, বসে থাকে কাজের প্রতি তার আগ্রহ কম। রোগীর মন ও দেহ ধ্বংশের দিকে চলতে থাকে।
রোগী অতিমাত্রায় শীতকাতর, কিন্তু শীতের দিনে সূর্যতাপ সে সহ্য করতে পারে না। রোগী
সালফারের রোগীর মত দুপুর এগারটায় ক্ষুধা পায়। আহার না করা পর্যন্ত উৎকন্ঠায় থাকে।
রোগী খাওয়া মাত্র পেট ফাপে ও উৎকন্ঠা বৃদ্ধি পায়। রোগীর ভুক্ত দ্রব্য হজম হওয়ার আগ
পর্যন্ত উৎকন্ঠা ভাব বিদ্যমান থাকে। রোগীর মন থেকে কখনও উৎকন্ঠা দুর হয় না।
উৎকন্ঠা দুর না হওয়ার অবস্হাটি অজীর্ণ পীড়ার জন্য দায়ী। রোগী দুধ সহ্য করতে পারে না।
দুধ খেলে উদরাময় ও গ্যাস জমে। নেট্রাম কার্বের রোগীর সকল লক্ষণ সান্তনায়,
সহানুভূতি প্রদর্শনে, মানসিক পরিশ্রমে, গরম ঘরে, সমুদ্রতীরে, সঙ্গম করার পরে, বেলা
নয়টা হতে এগারটায় রোগ বৃদ্ধি হয়। রোগী ডান পাশে শয়নে, উপবাসে, শক্তভাবে কাপড় পরিলে
আরাম পায়। মুক্ত বাতাসে, অন্ধকারে, নির্জনে ও বিশ্রামে আরাম বোধ করে সেই রোগীর
অজীর্ণ পীড়ায় নেট্রাম কার্ব উপযোগী।
আমার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিষয়ক সকল লেখা একসাথে পড়ুন।এপসটি ডাউনলোড করুন, আপডেট নিন। আমার মোবাইল এপস লিঙ্ক ঃ
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.aslamconsole.android.evahomeohall&fbclid=IwAR3mHp4BauqONW3oiO3eVCVTaCqrsPvcY5Z4qq3826ps_Avf6-wN-SixmEg
ডা. ইয়াকুব আলী মরকার।
সভাপতি
বাংলাদেশ অনলাইন হোমিওপ্যাথিক ফোরাম।
ইভা হোমিও হল।
গভঃ রেজিঃ নং২৩৮৭৬।
মোবাইল :০১৭১৬৬৫১৪৮৮
Nice
উত্তরমুছুনWelcome to you.
মুছুনNice
উত্তরমুছুনWelcome to you.
মুছুনস্যার আমার ডান দিকের অন্ড কোষে ছোট একটা টিউমার হয়েছে। এটা কি হোমিও চিকিৎসায় সুস্থ হওয়া সম্ভব জানাবেন?
উত্তরমুছুনসুস্থ হওয়া সম্ভব। সাক্ষাৎ শেষে নিশ্চিত করা সম্ভব।
মুছুনSir sex er problem a6e kon medicine ta khle prboble ta solv hbe blle valo hoi
উত্তরমুছুনবয়স ২২ দিন নাভি পুরোপুরি শুকায় নি। নাভি থেকে রক্তের ভেজা ভাব দেখা যায় এ সময় কি করণীয়।
উত্তরমুছুন