শনিবার, ১২ মে, ২০১৮

হোমিওপ্যাথির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও উন্নতির উপায়।

সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এক প্লাটফর্ম।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক অত্যন্ত প্রয়োজন। সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক বন্ধুদের এক প্লাটফর্মে একত্র হয়ে রোগীর আদর্শ আরোগ্য দানের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রয়োজন। তবেই এই মিশন সফল হবে। ডাঃ হ্যানেম্যান আমাদের গুরু রোগ আরোগ্য আমাদের উদ্দেশ্য।আমরা প্রত্যেকটি হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার একটি পরিবারের সসদস্য।আমাদের মাঝে কোন বিরোধ নেই।আমাদের দক্ষতা দ্বারা রোগীর সেবা দিব সেটাই হোক আমাদের প্রত্যয় ও উদ্দেশ্য।এই কাজটি অনেক কঠিন।একাজটির সফল বাস্তবায়ন একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ প্রয়াশ জরুরী।
আমরা যে যে ক্ষেত্রে সফল হয়েছি তা নিজ নিজ যোগ্যতা দিয়েই সফল হয়েছি।চাপাবাজি বা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নয়।টিকে থাকার জন্য কোয়ালিটি একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয়।বিজ্ঞাপনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আমি নেগেটিভ নই।আমাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়েই হোমিওপ্যাথির প্রচার ও প্রসার করব।রোগ আরোগ্যে কোন ভাবেই আলোস্য ও অবহেলা করিব না এটাই কাম্য।আমাদের দেশে অনেক সুনাম ধন্য ডাক্তার আছেন তারা ডিগ্রী প্রদর্শন না করে শুধু শ্রম ও নীতির দ্বারাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখছেন।আমরা হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারগন বর্তমানে বিভিন্ন মেথড ও মতবাদে বিভক্ত হয়ে বিবাদে জড়িয়ে পরছি।হোমিওপ্যথির অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্হ করছি।রোগীর মানসিক, আবেগ-অনুভূতি সংক্রান্ত ও শারীরিক লক্ষণাবলীর সাথে সদৃশতম (সিমিলিমাম),১টি মাত্র ঔষধ প্রয়োগ করা রোগ আরোগ্যের শর্ত। যেহেতু,বিজ্ঞানসম্মত ভাবে একটি সুস্থ মানবদেহে একটির অধিক ঔষধ একই সময়ে প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা অসম্ভব এবং প্রয়োগকরা হলেও কোন্ ঔষধের কি প্রতিক্রিয়া করে তা পৃথকভাবে জানা পুরোপুরি সম্ভব নয়।তাই রোগীর শরীরে ও রোগাক্রান্ত অবস্থায় একাধিক ঔষধ প্রয়োগ করা অসম্ভব। প্রকৃতপক্ষে, এ পদ্ধতি চিকিৎসকের জন্য অত্যন্ত শ্রমসাধ্য এবং প্রতিটি রোগীর জন্য নানাবিধ বিশ্লেষণ ও গবেষণা করতে অনেক সময়েরও প্রয়োজন।আধুনিক হোমিওপ্যাথদের পক্ষে বিড়ম্বনা বলে বোধ হলেও হোমিওপ্যাথির সাফল্য অত্যন্ত সন্তোষজনক। যদি সদৃশতম ঔষধটি খুঁজে পাওয়া না যায় তবে ফলাফল শুন্য বা বড়জোর রোগী কিছু সাময়িক উপশম লাভ করতে পারে। বিশ্বখ্যাত চিকিৎসকগন রোগ নিরাময়ে আজ অনেক গবেষনা করে সঠিক আরোগ্যের সঠিক পথেই অগ্রসর হচ্ছেন।আজ অনেক উচ্চ শিক্ষিত মেধাবীরাও হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হচ্ছেন।আমাদের দেশে অনেক উচ্চতর সরকারী কর্মকর্তাগন এগিয়ে এসেছেন।অনেক আশার কথা হলো এম.বি.বি.এস পাশ করেও অনেকেই হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারী পেশায় আত্ননিয়োগ করেছেন।
রোগ আরোগ্যের শর্তসমুহ: সদৃশ ঔষধ,সুহ্ম মাত্রা,একক ঔষধ,একক উৎস হতে তৈরী ও শক্তিকৃত,সুস্হ মানবদেহে পরিক্ষিত,জীবনী শক্তি তত্ত্বে বিশ্বাস এই কয়েকটি বিষয়ই মনে রেখে ঔষধ প্রয়োগে রোগের আরোগ্যে হবে।
এই বিষয়সমুহ আমাদের মাথায় রেখে, সততা মেধা প্রয়োগ করে রোগারোগ্যে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে হবে।
আমাদের মাঝে অনেক হোমিও চিকিৎসক আছেন যারা শ্রমবিমুখ এবং একাধারে বিশ্লেষণ ও গবেষণা বিমুখ। তারা রোগীর লক্ষণাবলী লিপিবদ্ধ করেন না, বুঝতে পারেন না ঠিক কি ঔষধ প্রয়োগ করবেন। মুলতঃ শ্রমবিমুখতা, সময়ের অভাব, চিকিৎসা পেশার প্রতি আন্তরিকতার অভাব এবং জনসেবায় অনীহা হেতু এ সকল চিকিৎসক সোজা রাস্তা বেছে নিয়ে রোগীকে ইচ্ছামত ৪/৫ টি হতে ২৫/৩০টি ঔষধও প্রয়োগ করে থাকেন। তাদের ধারণা সদৃশতম ঔষধটি এদের মধ্যেই কোন না কোনটিতে আছে,এবং তা কাজ করবে। এভাবেই তারা রোগীকে যথেষ্ট সময় না দিয়ে মূলতঃ ঔষধের ব্যবসা করে লাভবান হতে চান। যা রোগীর সাথে প্রতারণার সামিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ চিকিৎসায় কোন কোন ক্ষেত্রে সাময়িক উপশম হলেও হতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো রোগীর অবস্থা এতে অধিকতর জটিল হয় এবং রোগারোগ্যের সম্ভাবনা চিরতরে বিলিন হয়ে যায়।আমরা যদি মনোযোগের সাথে ও পেশাদারিত্বের সাথে এই চিকিৎসা পেশা করতাম;আমরা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে এই পেশার উৎকর্শ সাধনে উদাহারণ হয়ে থাকতাম। দেশে অল্প শিক্ষিত স্বশিক্ষিত অনেক মেধাবি আছে।আমাদের মাটি উর্বর আমাদের মানব সম্পদ অত্যন্ত মেধাবী।আমাদের বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলে না।তাদের কাজেই তাদেরকে যোগ্য স্হানে নিয়ে গেছে।আমাদের গুরু মহাত্মা হ্যানিম্যান যে অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে এই পেশাকে বিশ্ব দরবারে হাজির করেছেন তা যেন ভুলে গেছি।আমাদের বই পড়ার অভ্যাস ছেড়ে দিয়ে অযথা আসল নকল হোমিওপ্যাথির বাহাজ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি।যিনি হোমিওপ্যাথির জনক তিনিও দৈনিক কমকরে হলেও ১২ ঘন্টা লেখাপড়া করে নিজেকে ঝালিয়ে নিতেন। রোগীর রোগ নির্ণয় করে তার নিজের লেখা মেটেরিয়া মেডিকা পিউড়া হতে যাচাই করে নিতেন। ঔষধ নির্বাচন সঠিক হচ্ছে কিনা,সন্দেহ দুরে করে নিতেন। এখন ভেবে দেখুন আমাদের কি অবস্হা ?

রোগ আরোগ্যের চ্যালেঞ্জ নিতে আমাদের লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই।আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উন্নতি হউক এই প্রত্যাশা হোক সকলের।
রোগ আরোগ্যের মহান ব্রত নিয়ে বিবেধ ভুলে হোমিওপ্যাথির প্রচার ও প্রসারে একে অপরের পাশে দাড়াই।এই হোক আমাদের প্রত্যয়।

ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার।
ইভা হোমিও হল
বাইপাইল,সাভার,ঢাকা।
গভঃ  রেজিঃনং ২৩৮৭৬।
মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন