শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০

একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের ডাইরি(দ্বিতীয় পর্ব)

Diary of a homeopathic doctor

একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার আজীবন ছাত্র। লেখাপড়া ছাড়া একদিনও চলে না। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা একটি মহাসমুদ্র। এই সমুদ্র পাড়ি দিতে অনেক কষ্ট আর সাধনার প্রয়োজন।প্রতিদিন নতুন নতুন জিনিস জানতে জানতে আগের পড়া স্মৃতির আড়ালে চলে যায়। এই হাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ লেখাপড়া প্রয়োজনের সময় পেতে বেগ পেতে হয়। আর এ কারণেই একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের হাতের কাছে নোট খাতা বা ডাইরী রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি লেখাপড়া করার সময় যখনই সময় পাই তখনই লেখার সারমর্ম ফেসবুকে সেয়ার করে থাকি। আমার ডাইরিতে লিখে রাখার চেষ্টা করি। আমাদের কাছে যে হোমিওপ্যাথিক বিষয়ক বইগুলো পাই তা থেকে নিজে যা জানতে পাই তা সবাইকে জানাতে চেষ্টা করি। মানব কল্যানে আমার সামান্য শ্রম কাজে লাগবে এই প্রত্যাশায় আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়্যাস।
প্রথম পর্বে ১(এক) হতে ৫০(পঞ্চাশ)পর্যন্ত প্রকাশ করেছি। আজ ৫১ হতে ১০০ পর্যন্ত দেয়া হলো
 

ü 51*লাল বর্ণের প্রস্রাবের রোগীর সদৃশ ঔষধ- বোভিষ্টা, বেলেডোনা, লাইকোপোডিয়াম, সার্সাপ‍্যারিলা ইত‍্যাদি।

ü  52*বংশে ক‍্যানসারের ইতিহাস, সংক্রামক রোগে বারবার আক্রান্ত,দেহে অসংখ্য জড়ুল বা তিলক এই লক্ষণ সমষ্টির সদৃশ ঔষধ কার্সিনোসিন।

ü  53*নেট্রাম কার্ব শীতকাতর, নেট্রাম মিউর গরমকাতর, শৈত‍্যভিলাষী আর নেট্রাম সাল্ফ বর্ষাকাতর। গ্রীষ্মে তিনটি শ্রেণীরই কষ্টকর।

ü  54*পিত্তপাথুরীর জ্বালা,বেদনা,বমন ও লিভার অসুস্থতায় নাক্স, চায়না, কার্ডুয়াস, পডো ইত্যাদি বিফলেও কোলিস্টেরিনাম বিফল হয় না।

ü  55*নানা প্রকার ঔষধের বিষক্রিয়ায় রুক্ষ মেজাজ, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রা দূর করতে নাক্সভুমিকার প্রয়োজন অনস্বীকার্য।

ü  56*গর্ভস্রাব প্রবনতা আরোগ্যে সদৃশ ঔষধ- সিপিয়া, এপিস, ক্যালকেরিয়া কার্ব, স্যাবাইনা, এসিড নাই, থুজা, ইগ্নেসিয়া ইত্যাদি।

ü  57*জরায়ুর বহিনির্গমনের সদৃশ ঔষধ: সিপিয়া, লিলিয়াম, মিউরেক্স, হেলোনিয়াস, নেট্রামকার্ব ও মিউর, পালস ইত্যাদি।

ü  58*উচ্চ শ্রেণীর শীতকাতর রোগীর সদৃশ ঔষধ: হিপারসাল্ফ, সোরিনাম, লিডাম, কেলি কার্ব, ফেরাম ফস, ক্রিয়োজোট ইত্যাদি।

ü  59*তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, ভীরুতা, উদ্বিগ্নতা, হতবুদ্ধি কোন কাজ শুরু করিতে ভয় কিন্তু শুরু করলে অনায়াসে করে, সদৃশ ঔষধটি সাইলেসিয়া।

ü  60*ভিরেট্রাম এলবামের রোগী চিত্র: পিপাসা, কপালে ঘাম, বমি ও মলে দুর্গন্ধ, অম্ল খাদ্যের ইচ্ছা, অস্হিরতা সর্বক্ষেত্রেই রোগ প্রাবল্য ইত্যাদি।

ü  61*রোগীর রোগ সম্পর্কে ভাবলে রোগ বৃদ্ধি, কাজে ব্যাস্ত থাকলে উপশম, সদৃশ ঔষধ ক্যালকেরিয়া ফস, এসিড আক্সা, হেলোনিয়াস ইত্যাদি।

ü  62*হেলোনিয়াস ডায়োইকার রোগী চিত্র: অলস,দুর্বল, অস্হিরতা, অন্যের দোষ ধরে, জরায়ুর দুর্বলতা, গর্ভবতীদের ডায়াবেটিস ইত্যাদি।

ü  63*ভ্রান্ত রোগী-পেটে বায়ু জমায় ভাবে গর্ভবতী, গলায় রোগ-ক্ষতিকর ধারন করবে। ক্রিমির কারণে-কম্প, মাথা ব্যথা: স্যাবাডিলার সদৃশ লক্ষণ।

ü  64*প্রসবকালে মূর্ছার(Eclampsia)সদৃশ ঔষধ: সিকেলিকর, কুপ্রমমেট, সাইকুটা, নাক্স, জিঙ্ক, ওপিয়াম ইত্যাদি।

ü  65*"রক্ত শুন্যতা নিবারণের সদৃশ ঔষধ চায়না, কেলি কার্ব ও ফেরম মেট।চায়না তরুণ ফেরম পুরাতন রোগের,চায়না বিফলে কেলি কার্ব উপযোগী।

ü  66*গর্ভাবস্থায় অতিমাত্রায় উদাসীনতা, বিষন্নতা, বমি বমি ভাব, ৫ম হতে ৭ম মাসে গর্ভস্রাব প্রবণতার সদৃশ ঔষধ সিপিয়া।

ü  67*মাংস খেতে ইচ্ছুক রোগীর সদৃশ। ঔষধঃ ম্যাগকার্ব, মার্কসল, নেট্রাম মিউর, টিউবারকুলিনাম, ভিরেট্রাম এলবম,স্যানিকুলা ইত্যাদি।

ü  68*সুস্পষ্ট লক্ষণ ছাড়া ক্রনিক রোগীর চিকিৎসা এন্টিসোরিক সদৃশ ঔষধ দ্বারা শুরু করা উচিত। এ ক্ষেত্রে লাইকোপোডিয়াম দেয়া নিষেধ।

ü  69*কার্যের সাথে যেমন কারণের সম্পর্ক, হাইড্রোজেনয়েড ধাতুর রোগীর সাথে সাইকোসিস মায়াজমের সম্পর্ক তেমন।

ü  70**বোরাক্সের বিশিষ্ট লক্ষণ: স্নায়বিক দুর্বলতা, গরমকাতর, মুখের ঘা, অস্হিরতা, উৎকণ্ঠা, রমনীর প্রচুর সাদা স্রাব, দুগ্ধ বিস্বাদ ইত্যাদি।

ü  72*মলদ্বারে ফাটা রোগীর সোরা, সাইকোসিস, ত্রিদোষে, সিফিলিটিক দোষে যথাক্রমে সালফার, থুজা, এসিডনাই, সিফিলিনাম উপযুক্ত ঔষধ।

ü  73*এসিড মিউরের রোগী চিত্র:রাগী,ভীষণ দুর্বল, মলদ্বারে স্পর্শ কাতর, ঋতুকালীন মলদ্বারে ব্যথা , প্রস্রাবের সময় মলত্যাগ বাধ্য ইত্যাদি।

ü  74*ঋতুস্রাবের ১০ দিন পর শ্বেতপ্রদর শুরু হলে সদৃশ ঔষধ: কোনিয়াম, বোরাক্স, বোভিষ্টা ইত্যাদি।

ü  75*নোংরা রোগীর সদৃশ ঔষধ: সালফার, সোরিনাম, গ্রাফাইটিস এদের পার্থক্য যথাক্রমে নোংরা থাকতে পছন্দ, অসমর্থ, বোধশক্তির অভাব।

ü  76*রোগীর সামান্য নড়াচড়া, গোলমালে, গানবাজনাও অসহ্য, রোগ যন্ত্রনা বৃদ্ধির সদৃশ ঔষধ: এসিড ফস।

ü  77*হঠাৎ প্রস্রাবের বেগ আসে, সদৃশ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ: পেট্রোসেলিনিয়াম, ক্যান্থারিস, ক্যানাবিস স্যাটাইভা, মার্কসল ইত্যাদি।

ü  78*যে রোগীর হাতের কাছে ধারালো অস্ত্র পাইলেই কাউকে হত্যা করার প্রবৃত্তি চলিয়া আসে তার জন্য সদৃশ ঔষধ: এলুমিনা।

ü  79*Scrofula/ গন্ডমালা বলিতে রোগীর সেই দোষকে বুঝায়, যা শরীরের গ্রন্থি ফোলা, ফোড়া, মাথায় ঘর্ম, মেরাসমাস ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।

ü  80*নাভীর চারপাশে তীব্র বেদনাসহ লাল রক্ত মিশ্রিত শরৎকালের আমাশয়ে Atista Radix উপযুক্ত সদৃশ ঔষধ।

ü  81*জিঙ্কাম, কার্বোভেজ, এসিডমিউর, ফসফরাস, হেলিবোরাসের প্রতিক্রিয়া দেখে ডাক্তার ঘাবড়ে গিয়ে ঔষধ পাল্টায়, কিন্তু এটি ঠিক নয়।তীরে নৌকা ডুবে।

ü  82*ফেরাম মেটের রোগী চিত্র: মুখমণ্ডল,নাক,চোখ রক্ত শুন্য ফ্যাকাশে কিন্তু পরিশ্রমে বা বিরক্তিতে রক্তিম হয়ে উঠে,অসহিষ্ণু মন ইত্যাদি।

ü  83*জরায়ুর ফাইব্রয়েডের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঐষধসমুহঃ ক্যালকেরিয়া আইয়োড, সিকেলিকর, এসিডনাই, গ্রাফাইটিস, থুজা, আর্সেনিক, অরামমেট, বেলেডোনা, ক্যাডমিয়াম সাল্ফ, ক্যাডমিয়াম আয়োড, ক্যালকেরিয়া কার্ব, কার্বো এনিমেলিস, চায়না, ক্লিমেটিস, কোনিয়াম, ক্রিয়োজোট, আয়োডিয়াম, ল্যাকেসিস, লেপিস এল্বম, লাইকোপোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, মার্কসল, মিউরেক্স, ফসফরাস, রেডিয়াম ব্রোমাইড, সিপিয়া, সাইলেসিয়া, সালফার, হ্যামামেলিস, হাইড্রাসটিস, কার্সিনোসিন ইত্যাদি।

ü  84*ডিজিটেলিস হৃৎপিণ্ডের রোগীর জন্য অত্যন্ত উপকারী কিন্তু ভুল নির্বাচন ও নিম্ন শক্তিতে রোগীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

ü  85*শীতকালে বৃদ্ধির সদৃশ ঔষধ:- হিপার, মার্কসল, সোরিনাম, পেট্রোলিয়াম, কোষ্টিকাম, ক্রিয়োজোট, আর্সেনিক, কেলিবাই ইত্যাদি।

ü  86*কোনিয়ামের বিশিষ্ট লক্ষণ:অলস, নির্বোধ, উদাসীন, ক্ষীণ বুদ্ধি, সঙ্গম বাসনা দমন/ অতিরিক্ত সঙ্গমের কুফলে পক্ষাঘাত ইত্যাদি।

ü  87*চুল গুচ্ছ বদ্ধ কোঁকড়ানো রোগীর সদৃশ ঔষধ: বোরাক্স, লাইকোপোডিয়াম, এসিড ফ্লোর, সোরিনাম, টিউবারকুলিনাম ইত্যাদি।

ü  88*নানা প্রকার টিকার কুফল যুক্ত রোগীর চিকিৎসা করার প্রারম্ভে এক মাত্রা উচ্চ শক্তির থুজা প্রয়োগে রোগীর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় পরে সুনির্দিষ্ট ঔষধ সেবনে রোগ সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করে। থুজা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে ব্যর্থ হলে সালফার অথবা সোরিনামের প্রয়োজন হয়। এই সকল ঔষধ বিফলে পাইরোজিনাম ২/১মাত্রা প্রয়োগের ফলে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়, রোগীর সদৃশ ঔষধটি দ্রুত কার্যকর হবে, রোগীর আদর্শ আরোগ্য লাভ করবে।

ü  89*ভীষণ স্বার্থপর রোগীর সদৃশ ঔষধ: সালফার, আর্সেনিক, লাইসিন, ল্যাকেসিস, পালসেটিলা, সিপিয়া, টিউবারকুলিনাম ইত্যাদি।

ü  90*ক্রুদ্ধ স্বভাবের রোগীর সদৃশ ঔষধ:নাক্স ভুমিকা,হিপার সাল্ফ, আর্সেনিক, সোরিনাম, স্ট্যাফিসেগ্রিয়া, এসিড নাইট্রিক ইত্যাদি।

ü  91*বংশগত মানসিক রোগীর সদৃশ ঔষধ: ল্যাকেসিস, ফসফরাস, সিফিলিনাম, ভিরেট্রাম এলবাম, আর্জেন্ট নাই/ মেট, অরাম এনাকার্ডিয়াম ইত্যাদি।

ü  92*যে রোগীর মাঝে যেকোন বস্তূতে অগ্নিসংযোগ করিবার খেয়াল চলিয়া আসে সেই রোগীর সদৃশ ঔষধ:হিপার সাল্ফ।

ü  93*কেলি কার্বের রোগী চিত্র: মোটাদেহ, ক্রোধী,ঝগড়াটে, ভীত, শীতকাতর, খাদ্য গ্রহণের পর ও রাত ৩টা-৫টায় রোগ বৃদ্ধি।

ü  94*ধাতুগত গভীর কার্যকররী: সাইলেসিয়া, ফসফরাস, হিপারসাল্ফ, সালফার, কেলি কার্বের প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুর আশংকা থাকে।

ü  95*স্পাইজেলিয়ার রোগী: সামান্য কারণে ক্রোধ অসন্তুষ্টি, শব্দ নড়াচড়া অসহ্য, সূচালো বস্তুতে ভয়, ক্রিমি গ্রস্থ, স্পর্শে শিউরে উঠে ইত্যাদি।

ü  96*অস্ত্রপাচার স্হানে সুচফোটানো বেদনা আরোগ্যে ষ্ট্যাফিসাগ্রিয়া একমাত্র ঔষধ।মরফিয়ার চেয়েও বেশি কার্যকর।

ü  97*সিকেলি করের স্হূলমাত্রা প্রয়োগে গর্ভধারণে বাধা দেয়,গর্ভস্রাব করায়, গর্ভফুল নিস্ক্রান্ত করতে এ্যালোপ‍্যাথিতে ব‍্যবহৃত হয়।

ü  98*সিকেলির করের রোগিনী ক্রোধী, দুর্বল,ক্ষীনদেহ,রক্তস্রাব প্রবণতা, স্রাবের ক্ষতকারিত্ব ও দূর্গন্ধ, সর্বাঙ্গে সুড়সুড়ি বোধ ইত্যাদি।

ü  99*জিঙ্কাম মেট রোগীর বৈশিষ্ট্য: হাতপায়ের কম্প, উত্তেজনা পরে অবসাদ, উদ্ভেদ, স্রাব, দাত উঠতে বাধাগ্রস্ত হয়ে তড়কা, মেনিঞ্জাইটিস ইত্যাদি।

ü  100*শিশুকে বকাবকি, সামান্য মারধরের পারে বিছানায় শুইয়ে দিলে অসুস্থ হয়,ঘুমের মধ্যে হাতপায়ে খিচুনি হলে ইগ্নেসিয়া প্রযোজ্য।(চলবে)

আমার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিষয়ক সকল লেখা একসাথে পড়ুন।এপসটি ডাউনলোড করুন,আপডেট নিন।আমার মোবাইল এপস লিঙ্ক ঃ

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.aslamconsole.android.evahomeohall&fbclid=IwAR3mHp4BauqONW3oiO3eVCVTaCqrsPvcY5Z4qq3826ps_Avf6-wN-SixmEg

ডা: ইয়াকুব আলী সরকার
ইভা হোমিও হল।
বাইপাইল, সাভার, ঢাকা।
গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬।

মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন