শুক্রবার, ১৫ জুন, ২০১৮

ফসফরাসের পরিচিতি ও প্রয়োগ লক্ষণ

PHOSPHORUS

ফসফরাস-
 ব্যক্তি লক্ষণ ভিত্তিক, গভীর, দীর্ঘক্রিয় ও পলিক্রেস্ট ঔষধ। অ্যান্টি সোরিক, অ্যান্টি সিফিলিটিক, এন্টি সাইকোটিক, এন্টি টিউবারকুলার।

উৎস- খনিজ।

কাতরতা- শীত কাতর।

জিহ্বা- কাল বর্ণ।

আক্রান্ত দিক-

ডান দিক থেকে বাম দিকে।শরীরের উপরের অংশ ডান দিক। শরীরের নিচের অংশ বামদিক আক্রান্ত হয়।
আকৃতি-

পাতলা গঠন, বেশ লম্বা, দ্রুত বর্ধনশীল, বয়সের তুলনায় লম্বা, একহারা চেহারা, হাঁটলে যেন বাতাসে দোলে, গায়ের রং ফ্যাকাশে, ফর্সা। সামনের দিকে কুজো, সুন্দর পটল চেরা চক্ষু, নরম, সুন্দর, রেশমি কালো চুল। এক কথায় রাজকীয় চেহারা,চেহারা দেখে বেশ বুদ্ধিমান মনে হয়।
মানসিক লক্ষণ

খোলামেলা মনের মানুষ, মনের মধ্যে কোন কথা লুকিয়ে রাখে না। ফসফরাসের অন্যতম অনুভূতি, সে আপন জনের কাছ থেকে যথেষ্ট ভালোবাসা, মূল্যায়ন, মনোযোগ পাচ্ছে না। তাই এর অভাব পূরণের জন্য সে বাড়ির বাইরে অনেক বন্ধু বা সম্পর্ক তৈরি করে, অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে। সে মনে করে অন্যের প্রতি ভালোবাসা সহানুভূতি ও স্নেহের বিনিময় অন্যের মনোযোগ পাবে। তার মনে হয়,আরো সঙ্গী চাই, ভালোবাসা চায়, সে কারণে অন্যের প্রতি খুব খেয়াল রাখে, নিজের কাজ বাদ দিয়ে অন্যকে সহযোগিতা করে, এরা সহজে বন্ধুত্ব করতে পারে, এদের যেমন ব্যাপক সহানুভূতিশীলতা আছে তেমনি ব্যাপক প্রতিক্রিয়া প্রবণতাও আছে।এরা খুব একাকীত্ব বোধ করে, এ কারণে রাগ দুঃখ ভয়ে এরা সহজে আক্রান্ত বা উত্তেজিত হয়।
ফসফরাসের রোগীরা খুব চঞ্চল ও প্রাণোচ্ছল প্রকৃতির। সম্পর্ক তৈরি, মানুষের কাছাকাছি আসা, নিজস্ব অবস্থান সৃষ্টি করার জন্য যা করা দরকার সে তার আচরণ দিয়ে তা করে। যেহেতু তার মধ্যে ধারণা কাজ করে যে কেউ তাকে সত্যিকারের মনেপ্রাণে ভালোবাসে না, তাই কারো সাথে গভীর, আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে না। অধিকাংশ সম্পর্কই অগভীর বা উপরে উপরে গড়ে ওঠে। এরা অতিশয় ভীতু, বিদ্যুৎ চমকানোর সময় বা রাতে একা থাকতে পারে না। অতিশয় ফুর্তিবাজ ও চটপটে। বাচালতায় ল্যাকেসিসের মতো এক বিষয় থেকে অন্য বিষয় বার-বার পরিবর্তন করে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কথা বলে না,বরং সামঞ্জস্যপূর্ণ ও অর্থবহ কথাবার্তা বলে। ফসফরাসের রোগীরা চেম্বারে এসে নেট্রাম মিউয়ের রোগীর মতো পিছনে হেলান দিয়ে বসে,দূরত্ব বজায় রাখে না্, রিজার্ভ হয়ে বসে না থেকে বরং খুব কাছাকাছি বসে, বা টেবিলে হাতে ভর দিয়ে সামনে ঝুঁকে বসতে পারে। মুখে মিষ্টি হাঁসি নিয়ে, খুব সহজেই আপনার সাথে কথা বলা শুরু করে, সহজে মিশে যেতে পারে, ক্ষণিকের মধ্যেই আপন করে নিতে পারে, ভাবখানা এমন যেন বহু দিনের পরিচিত।
এরা সব বিষয় কারণ খুঁজে, তীক্ষ্ণ মেধার কারণে এদেরকে এক কথা দুই বার বলা লাগে না। উত্তেজনা আনে এমন নাটক, সিনেমা, ভুতের গল্প, রোমাঞ্চকর কাহিনী বা দৃশ্য দেখতে বা শুনতে ভালোবাসে। এরা স্নেহ পরায়ণ, শিল্পী মনা, গায়কি স্বভাবের, সৃষ্টিশীল।  এর শিশুরা খুব খোলামেলা, চঞ্চল ও ভীরু। এরা খুব বাচাল হয়, অবিরত প্রশ্ন করে, জানার আগ্রহ প্রচুর। শিশুরা মাকে প্রশ্ন করেই চলে, একবার এ কথা, একবার সে কথা জিজ্ঞাসা করে।এর শিশুরা যে কোনো আত্মীয় বাড়ি,অচেনা পরিবেশ, স্কুলে সহজেই যে কারো সাথে সম্পর্ক করতে পারে। সমবয়সীদের বন্ধু, বড়দের মামা, খালা, চাচা, ফূফ, দাদা, নানা ইত্যাদি বানিয়ে ফেলতে পারে। ফসফরাসের কাছে সবাই যেন তার ভালো বন্ধু। কোথাও একদণ্ড স্থির থাকতে পারে না, একদম স্থির ভাবে বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা তার কাছে অসম্ভব। একবার উঠে, একবার বসে,এদিক চাই, ও দিক চায়।

মূল কথা

 খুব পিপাসা, লবণ, মাছ, চকলেট, মিষ্টি, আইসক্রিম, ঠান্ডা পানীয় খাবার খুব ইচ্ছা। শান্ত বা মেজাজি স্বভাব, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, অল্পে ঠান্ডা লাগে, অতিরিক্ত রক্তস্রাব ও উদরাময়ের প্রবনতা যেন তার অকাল মৃত্যুর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। বাম পাশে চেপে শুয়ে ঘুমাতে পারে না। ডান পাশে শয়নে আরাম বোধ করে।

বাচালতা ও চঞ্চলতা

ফসফরাসের শিশু এক মুহুর্তও এক জায়গায় স্হির থাকতে পারে না। সে বজ্রপাতের ভয়ে কাতর থাকে। অস্হির ও অন্যমনস্ক।
উন্মাদ অবস্হা

ফসফরসের রোগী উন্মাদ অবস্হায় কামোন্মাদ হয়, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে। শীতল পানি পানে ও শীতল পানীয়, সুনিদ্রা,অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, হাত ধোয়াইয়া দেওয়া তার কাছে আরামদায়ক। গায়ে হাত বুলাইয়া দিলে সে আরাম পায়।
শুন্যতা বোধ

ফসফরাসের রোগী তার বুকের মধ্যে, পেটের মধ্যে, মাথার মধ্যে অত্যন্ত শুন্যতা বোধ করে সাথে দুর্বলতা অনুভব করে। এ অবস্হায় ফসফরাস উচ্চ শক্তি ব্যবহার নিষেধ। ফসফরাসের রোগীর ক্ষুধা ও পিপাসা উভই প্রবল। ক্ষুধার সময় খাইতে না পারিলে তাহার দুর্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং তাহার সকল রোগ যন্ত্রনাও বৃদ্ধি পায়। কিছু খাইলে আরাম। কলেরা ও উদরাময়ে এই লক্ষণটি স্মরণে রাখা জরুরি। ফসফরাসের রোগী গরম সহ্য করতে পারে না ও যত ঠান্ডা খাবার খায় ততই আরাম বোধ করে।পেটে খাদ্য প্রবেশের কিছুক্ষণ পরে পেটে খাদ্য গরম হওয়া মাত্র বমি হয়। যদি কোন রোগী বলে আমার গরম খাদ্য সহ্য হয় না তখনই ফসফরাসের কথা স্মরণ করিবেন। গার্ভবস্হায় ফসফরাসের রোগীনী পানির কাছে যাইতে পারে না পানি পান করিতে চায় না এমনকি পানিতে হাত মুখ ধুইতে পারে না।
জ্বালা

ফসফরাসের রোগীর পায়ে জ্বালা, মাথায় জ্বালা, পেটে জ্বালা, ভিতরে বাহিরে সর্বত্র জ্বালা কিন্তু এত জ্বালা সত্ব্যেও সে মাথা, পেট ও মুখমন্ডর ছাড়া সর্বশরীর ঢেকে রাখে। মাথার যন্ত্রনায় মাথায় কাপড় রাখিতে পারে না। গরমও পছন্দ করে না। অবশ্য হাতের তালু ও পায়ের তালু ঠান্ডা পানিতে ধুইতে চায়। মেরুদন্ডে জ্বালা অনুভব করে।
ফসফরাস প্রয়োগ ক্ষেত্র

হিপ জয়েন্ট প্রদাহ,সন্ধি প্রদাহ, এপেন্ডিসাইড, মেদ পূর্ণ হৃদপিন্ড, কিডনি ও লিভার জনিত শোধ, হাত পা মুখ বিশেষ করে চোখের নিচের পাতা ফুলিয়া উঠে। শ্বাসকষ্ট ও রক্তহীনতা দেখা দেয়।
উদরাময় ও কলেরা

 মলদ্বার প্রায় খোলা থাকে। অসারে মলত্যাগ করে। মলের সাথে সাগুদানার মত পদার্থ ভাসিতে থাকে।
মূত্র

মূত্রে শর্করা বিদ্যমান ও ডায়াবেটিস।
হিক্কা

ভুক্ত দ্রব্য টক হইয়া উঠিয়া যায়।
নাক

নাকে পলিপাস,পলিপাস হতে রক্ত স্রাব হয়।
কান

বধিরতা,মানুষের কণ্ঠ স্বর ছাড়া অন্য শব্দ শুনিতে পায়।
চোখ

দৃষ্টির নানাবিধ গোলযোগ।নেত্রনালী শুকাইয়া যাওয়ার ফলে দৃষ্টিহীন।
জ্বর

সান্নিপাতি বা সবিরাম জ্বরে সঙ্গাহীন অবস্হায় শুন্যের দিকে কি যেন ধরিতে চায়।
সন্যাস বা এ্যাপিলেপ্সি

মুখের বাম দিকে বাকিয়া যায়। মৃগীর আক্ষেপ কালে জ্ঞান থাকে।
বাত বেদনা

অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বাতের বেদনা উত্তাপে উপসম হয়।
পক্ষাঘাত

পক্ষাঘাত গ্রস্হ অঙ্গের আক্ষেপ, হাত বুলাইয়া দিলে আরাম পায়।
নিউমোনিয়া

নাকের পাতাগুলো নড়িতে খাকে। ফসফরাসের রোগীর গঠনের সাথে ঘড়ঘড় শব্দ করে, শ্বাস কষ্টের সাথে যক্ষা থাকে।
কোষ্ঠবদ্ধতা

শক্তমল অনেকটা কুকুরের মলের মত,সরু ও লম্বা হয়ে নির্গত হয়।
কাশি

ক্রুপ কাশির সহিত স্বর ভঙ্গ, দ্রুত দুর্বলতার সহিত শীতল ঘর্ম। বুকের মধ্যে ঘড়ঘড় করে। চোয়াল ঝুলিয়া পরে।
স্ত্রী যন্ত্র

স্তন ও স্ত্রী জনন অঙ্গে ইরিসিপেলাস, ক্যান্সার, মাসিক অতিরিক্ত হয়। অতিরিক্ত গর্ভধারন জনিত জরায়ু প্রদাহ, জরায়ুর স্হান চ্যুতি বা শিথিলতা, মূল কথা হলো ফসফরাসের রোগীর আকৃতি ও প্রকৃতি মিলিয়া গেলে যে কোন রোগ লক্ষণে প্রয়োগ যোগ্য।
পুং জনন ইন্দ্রিয়

সঙ্গমেচ্ছা ও লিঙ্চ্ছাস প্রবলরতি শক্তি বৃদ্ধিতে ফসফরাস ফলপ্রদ কিন্ত অপপ্রয়োগে ক্ষতিকারক।

সতর্কতা

কষ্টিকামের পরে বা পূর্বে ফসফরাস ব্যবহার নিষিদ্ধ।
প্রতিষেধক-
 নাক্স ভুমিকা।

আমার ফ্রী মোবাইল এপসটি ডাউনলোড করুন এবং আমার সকর লেখা আপডেট নিন নিয়মিত।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.aslamconsole.android.evahomeohall&fbclid=IwAR3mHp4BauqONW3oiO3eVCVTaCqrsPvcY5Z4qq3826ps_Avf6-wN-SixmEg


ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার

ইভা হোমিও হল

বাইপাইল, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা।

গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬।

মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮G

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন