সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২০

সর্বনিম্ন কয়টি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সম্পর্কে জানতে হবে?

ডাঃ রবিন বর্মন (এম ডি)

ডাঃ রবিন বর্মন স্যারের উপস্হানায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আরোগ্য লাভের জন্য জরুরি কতগুলো হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সম্পর্কে একজন দক্ষ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের জন্য জানা জরুরী ?
কোন মেথড আদর্শ আরোগ্যের উপায়?
এই বিষয়ে ডাঃ রবিন বর্মন স্যারের ভাষ্যমতে বিস্তারিত জানুন।

★ কেবলমাত্র  মানসিক লক্ষণ বিচার করে সবসময় সব রোগ সারানো যাবে না ,

★ ১২/১৩ টি ঔষধ দিয়েও সব  রোগ সারবে না। তাই যদি হতো তাহলে হ্যানিম্যান, হেরিং, কেন্ট,  এত সব ঔষধের পিছনে দৌড়াতো না । এমন সব ভাঁড়ামো থিওরি মানতে যাবে না । এইসব নোংরামো দেখলে দূরে সরে আসবে । সেই সব আবাল লোকদের ছায়া মাড়াবে না।  মনে রাখতে হবে ---- হোমিওপ্যাথিকে কফিনে ঢুকিয়ে ঢাকনা দিয়ে আটকানোর জন্য এরা এক একটি বড় বড় পেরেক।

★ হ্যানিম্যানের সময় পাল্টে গেছে তাই এখন যুগের সাথে একসাথে অনেক ঔষধ দিতে হবে, এইসব অর্বাচীনদের কথা মূল্যহীন । ডেভিডশনের এ্যালোপ্যাথিক প্র্যাকটিস অফ মেডিসিন বইয়েও লেখা ---
" Polypharmacy must be avoided, one reason, being the counter action of medicines ".

★ মায়াজম মানি না,  ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস অনুযায়ী চিকিৎসা করবো অথচ কলেজে পড়াবো --++এইসব নাটকবাজ বা কৃত্রিম হোমিওপ্যাথদের থেকে দূরে থাকতে হবে ।
হ্যানিম্যানের মায়াজম থিওরি কে বহু বিদগ্ধ  মানুষ সমর্থন করেছেন।

★মায়াজম মানে বড্ড বেশী কচকচানি বা বড্ড বেশী ফ্যানানো, বা বড্ড বেশী নাটক করা নয় ।  হ্যানিমান লিখেছেন সাড়ে তিন পৃষ্ঠা, কিছু কিছু  থিওরিট্যাকাল চ্যালারা গ্যাজাচছে হাজার পৃষ্ঠা।

 সাধারণভাবে রোগগুলিকে তিন গ্রুপে ফেলা  হবে , এবং ঔষধ গুলিকেও তদ্রুপ তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হবে।  যে গ্রুপের রোগ ---    সেই গ্রুপের ঔষধ নির্বাচন করার চেষ্টা করতে হবে ।

ব্যাংকক যাওয়ার রুট যেমন আলাদা,  চীনে যাওয়ার রুট যেমন আলাদা ,  পাকিস্তান যাওয়ার রুট যেমন আলাদা --- মায়াজম মানে তেমনি আমি একজন রোগীর ঔষধ সিলেকশনে কোন রুটে যাবো সেইটাই বিচার্য।

 সংক্ষেপে তিনটি শব্দ আমি বলে দিয়েছি সোরা মানে ইরিটেশন ,  সিফিলিস মানে ডেস্ট্রাকশন ,  আর সাইকোসিস মানে প্রলিফারেশন  এবং ইনকরডিনেশন।

 ★গুছিয়ে কেস টেকিং করতে হবে।  গুছিয়ে ঠান্ডা মাথায় কেস টেকিং করার কোন বিকল্প ব্যাপার নেই ।  কেস টেকিং গুছিয়ে না হলে  বা সম্পূর্ণভাবে না করতে পারলে ঔষধ সিলেকশন ভুল হবে।

 ★মেটিরিয়া মেডিকা,  রেপার্টরী,  এবং প্র্যাকটিস অফ মেডিসিন বারবার পড়তে হবে, এবং  বুঝতে হবে  কোন লেখা কোথায় কিভাবে প্রযোজ্য হবে। প্রতিটি লেখা ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করতে হবে,  অর্থাৎ ইন্টারপ্রিটেশন করতে হবে। বোকার  মতন পড়ে গেলে হবে না ।

★কম্পিউটার রেপার্টরাইজেসনের  মাধ্যমে সিমিলিমাম ঔষধ সিলেকশন   হয় না।  ঔষধের যোগফল  সবথেকে বেশি হলেই সেই ঔষধ  সিলেকশন করতে হবে  তা হতে পারে না ।  তা যদি হতো  একজন ব্যবসায়ী হোটেল ব্যবসার মতন কিছু কম্পিউটার কিনে লোক লাগিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসালয় চালাতে পারতো।  রেপার্টোরাইজেসন দিকনির্দেশনার মতন  কয়েকটি ঔষধ সামনে দেখাতে পারে।  কিন্তু একজন চিকিৎসকের  বুদ্ধি,  অনুধাবন ক্ষমতা,   বিচার-বিবেচনা,  পর্যবেক্ষণ ,  ইত্যাদির উপরে  নির্ভর করে ঔষধ  সিলেকশন।

 ★ কোন রোগের জন্য কোন স্পেসিফিক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ হতে পারে না।  একই রোগে পরপর দুইজনের ঔষধ  ভ্যারি করতে পারে, অর্থাৎ আলাদা হতে পারে। রোগের নাম ধরে ঔষধ ভাবলে সিলেকশনে কিন্তু মস্ত ভুল হবে।

★ প্রতিটি সেমিনার, ওয়ার্কশপ,  আলোচনা, ইত্যাদি থেকে কিছু না কিছু শেখা যায়।  তাই মাঝে মাঝে যে দেখি অনেকে  গা-জোয়ারি ভাষায় পোস্ট দেন,
 কোন সেমিনার, ওয়ার্কশপ, থেকে কিছু শেখা যায় না --তা ভুল,  মিথ্যা, অবিবেচকের মতন কথা । এসব কথায় তাদের নিজেদের অজ্ঞতা, জ্ঞাণের দৈন্যতা, ও  অপারদর্শিতা  প্রকট হয়ে উঠে ।
" মনে রাখতে হবে ---- A mouse can help a lion'

ডাঃ রবিন বর্মন(এম ডি)।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক,গবেষক ও লেখক।
পশ্চিম বঙ্গ,ভারত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন