Homeopathic treatment for delayed in girls first menses . |
মেয়েদের মাসিক হইতে বিলম্ব হলে দুশ্চিন্তার কারণ।সঠিক সময়ে মাসিক না হলে কিম্বা কোন দিন মাসিক না হলে সন্তান ধারনের সামর্থ ্অর্জন করতে পারে না।যৌবনের প্রারম্ভে সাধারণত ১২ থেকে ২০ বছর বয়সে কারো শরীরের ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের অপরিপক্বতা (প্রিমেচিউর) থেকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয় অথবা মাসিক শুরু হইতে বিলম্ব হয়।
বিলম্বিত মাসিকের কারণঃ
পিরিয়ড বা ঋতুচক্র নারীদেহের স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া।প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিটি নারীর পিরিয়ড হয়ে থাকে।কিন্তু অনেক সময় এই সময়ের পরও পিরিয়ড হতে দেরী হয়।কোন কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট বয়স পার হয়ে যাবার পরও পিরিয়ড হয় না।আর পিরিয়ড না হওয়ার কারণে মেয়েরা অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন।
১। অতিরিক্ত মানসিক চাপঃ
পিরিয়ড দেরী হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হল অতিরিক্ত মানসিক চাপ।অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে প্রথম মাসিক শুরু হতে দেরি হতে পারে।হরমোনের স্বাভাবিক কার্যপ্রক্রিয়া ব্যাহত হলে মাসিক দেরীতে হয়।
২।অতিরিক্ত ওজন অথবা কম ওজনঃ
অতিরিক্ত ওজন অনিয়মিত পিরিয়ডের জন্য দায়ী।আবার হঠাৎ করে আপনার ওজন যদি কমে যায়,ফলে মাসিক শুরু নাও হতে পারে।
৩।থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতাঃ
থাইরয়েড গ্ল্যান্ড যা আমাদের গলার নিচে অবস্থিত।এটি শরীরে মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ রাখার পাশাপাশি দেহের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে।থাইরয়েড গ্রন্থির যেকোন সমস্যার কারণে মেয়েদের মাসিক সঠিক সময়ে নাও হতে পারে।
৪।পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমঃ
এটি একটি হরমোনজনিত রোগ।শরীরের জরুরি তিনটি হরমোন এস্ট্রোজেন,প্রোজেস্টেরন এবং টেসটোস্টেরন উৎপাদনের মাত্রা কমে যায় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম হলে মাসিক দেরীতে হয়ে থাকে।
৫।অসুস্থতাঃ
মাসিক যথা সময়ে না হওয়ার আরেকটি প্রধান কারণ হল অসুস্থতা।মেয়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে শরীর দূর্বল হয়ে পড়ে,যার কারণে মাসিক হতে দেরী হয়।
মেয়েদের মাসিক না হলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিন-
হোমিওপ্যাথির ওষুধগুলি বিলম্বিত মাসিকের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।হোমিওপ্যাথিক সিকিৎসার সূত্রমতে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করে যথা নিয়মে সেবনে দ্রুত কাজ করে।বিলম্বিত মাসিকের জন্য শীর্ষ গ্রেডের ওষুধগুলি হ'ল পালসেটিলা,সিপিয়া,ন্যাট্রাম মিউর,কোনিয়াম এবং সেনেসিও অ্যারিয়াস,নাক্স ভুমিকা, নেট্রাম মিউর ইত্যাদি।
বিলম্বিত মাসিকের সদৃশ চিকিৎসায় ঔষধ সির্বাচন গাইডঃ
পালসেটিলাঃ
ক্রন্দনশীল,ধীর,নম্র,অভিমানী সহজেই দুঃখ পায় ও মনমড়া হয়ে থাকে।না কেদে রোগের কথা বলতে পারে না।এমন রোগীর অনিয়মিত ঋতুর জন্যে উপযোগী।ঋতু দেরিতে হয় এবং পরিমাণে অনেক কম হয়।কোমরে ব্যাথা,প্রস্রাবের বেগের মত বেগ।কপালের মাঝখানে ব্যাথা করে রক্তস্রাব এবং পরিবর্তনশীল স্রাবে উপকারী।স্রাব কখনও পানির মত,কখনও লাল,কখনও কাল।বিলম্বিত মাসিকের জন্য শীর্ষ গ্রেড মেডিসিন পালসেটিলা।পলিসিস্টিক ওভারির করণে বিলম্বিত মাসিক হলে পালসেটিলা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।গলা শুকিয়ে থাকে কিন্তু কোন পানি পিপাসা থাকে না, ঠান্ডা বাতাস-ঠান্ডা খাবার-ঠান্ডা পানি পছন্দ করে,গরম আলো বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে রোগীনী বিরক্ত বোধ করে,আবেগ প্রবন, অল্পতেই কেঁদে ফেলে এবং যত দিন যায় ততই মোটা হতে থাকে ইত্যাদি লক্ষণ সমষ্টিসহ কোন বালিকার মাসিক শুরু হতে বিলম্ব হলে পালসেটিলা উপযোগী।
সিপিয়াঃ
হরমোন ভারসাম্যহীনতা থেকে বিলম্বিত মাসিকের চিকিৎসায় সিপিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।সিপিয়া হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সংশোধন করতে এবং মাসিক যথা সময়ে আনয়নে আশ্চর্যরূপে সহায়তা করে।যে রমনীর নিজ পেশা পরিবারের লোকজনদের প্রতি উদাসীনতা,রোগী সবর্দা শীতে কাঁপতে থাকে,পেটের ভিতরে চাকার মতো কিছু একটা নড়াচড়া করছে মনে হওয়া,পাইলস,পায়খানার রাস্তা বা জরায়ু ঝুলে পড়া (prolapse),খাওয়া-দাওয়া ভালো লাগে না,পায়খানার রাস্তা ভারী মনে হয়,মুখের মেছতা,যৌনাঙ্গে এবং পায়খানার রাস্তায় ভীষণ চুলকানি, দীর্ঘদিনের পুরনো সর্দি,অল্পতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে,দুধ হজম করতে পারে না,স্বভাবে কৃপন-লোভী,একলা থাকতে ভয় পায়,এই লক্ষণ সমষ্টি রমনীদের জন্য মাসিক শুরু হতে বিলম্ব হলে উপযোগী
নেট্রাম মিউরঃ
অল্প বয়সী মেয়েদের পিরিয়ডের জন্য অল্প বয়সী মেয়েদের বিলম্বিত মাসিকের জন্য নাট্রাম মিউর একটি বিশিষ্ট ঔষধ।পেটে ভারাক্রান্ততা বিলম্বিত মাসিক হতে পারে। যখন মাসিক হয় তখন প্রবাহটি অল্প বা অপ্রয়োজনীয় হতে পারে।এগুলি ফ্যাকাশে,পাতলা পানিরমত হয়। অ্যানিমিয়ার কারণে মাসিক না হলে নেট্রাম মিউর উপযোগী।মনে দুঃখ,বুক ধড়ফড়সহ মাসিক না হলে ও লবন প্রীয় রোগীর জন্য উপযোগী।
কোনিয়াম ঃ
বিলম্বিত,স্বল্প ও স্বল্প সময়ের মাসিক হলে কোনিয়াম এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত। যেখানে মাসিক দেরিতে, স্বল্প এবং স্বল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয় সেখানে কোনিয়াম প্রয়োজন হয়।রোগী কাঁদে, অস্থিরতা ও উদ্বেগ এবং মাসিকের আগে স্তনে ব্যথা হতে পারে।কিছু ক্ষেত্রে পিরিয়ডের আগে ত্বকের ফুসকুড়ি দেখা দেয়।হাইপোগ্যাসট্রিক অঞ্চলে পিরিয়ডের সময় ব্যথা,পা এবং পিছনে তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভূত হতে পারে।কোনিয়াম নির্দেশিত যেখানে ডিম্বাশয়ে প্রদাহ,বৃদ্ধি এবং ব্যথা উপস্থিত হতে পারে।
সেনেসিও অরিয়াস ঃ
সংবেদন সহকারে রোগীর মনে হয় মাসিক উপস্থিত হবে কিন্তু না এরুপ ক্ষেত্রে সেনেসিও অরিয়াস উপযোগী।প্রাকৃতিক ক্রম সংমিশ্রণের স্কোয়া-ওয়েড নামে একটি উদ্ভিদ থেকে প্রস্তুত করা হয়।বিলম্বিত মাসিকের চিকিৎসার জন্য সেনেসিও অ্যারিয়াস মূল্যবান সদৃশ ঔষধ।নিদ্রাহীনতা এবং ক্ষুধা হ্রাস সহ অন্যান্য সাধারণ লক্ষণ ও পিঠে এবং কাঁধে ব্যথাও উপস্থিত হতে পারে।এটি অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে মানসিক চাপের জন্য মাসিক না হলে অত্যন্ত কার্যকর।
ল্যাকেসিসঃ
ল্যাকেসিস বিলম্বিত মাসিকের সদৃশ চিকিৎসার একটি সহায়ক ওষুধ।র্যাকেসিসের প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেঃ মাসিক দেরীতে উপস্থিত হয় এবং । অল্প মাসিক উপস্থিত হয়।মাসিক প্রবাহ যত কম হয় তত বেশি ব্যথা হয়। ব্যথা সবচেয়ে বাম ডিম্বাশয়ে চিহ্নিত করা হয়।মাসিক বন্ধ থাকলে মাথা ঘুরায় এবং মাথা ব্যথা কিছু ক্ষেত্রে থাকতে পারে।
গ্রাফাইটিসঃ
মোটা মেয়েদের ঋতুস্রাবে বিলম্ব,সামান্য মাত্রায় জলের ন্যায় ঋতুস্রাব।রোগীনী বিষন্ন,অশুভ চিন্তা করে,সর্বদা শীত ভাব গাত্রচর্ম শুস্ক,চর্মরোগ ও কোষ্ঠবদ্ধতায় উপযোগী।দেরীতে মাসিক ও সহিংস বেদনার সাথে মাসিক উপস্থিত হলে গ্রাফাইটিস সদৃশ চিকিৎসার দরকারী ঔষধ।সেলাই করার মত,খোচামাড়া ব্যাথা, পেটে গুরুতর ব্যথা,কোমর এবং পিছনে ব্যথা থাকে।যোনিতে সূই ফোটানো বা জ্বলন্ত ব্যথা অনুভূত হতে পারে।মাথা ব্যথা এবং বমি বমি ভাবও দেখা দিতে পারে।হাত পা ঠান্ডা।মাসিক দেখা দিলে রক্তের প্রবাহ ফ্যাকাশে বা কালো বর্ণের হয়।কিছু ক্ষেত্রে, নিয়মিত সময়ের পরিবর্তে লিউকোরিয়া দেখা দেয়।এই ধরনের ক্ষেত্রে, যোনিপথ স্রাব দিনের বেলা বা রাতের বেলায় কমে।
ক্যালি কার্ব ঃ
রক্তহীন,দুর্বল,নিদ্রাহীন,মুখমন্ডল শীর্ণ ও শুস্ক মন বিষন্ন সামান্য কারনে ক্রুদ্ধ হওয়া,হৃৎকম্প মানসিক উত্তেজনা প্রভৃতি লক্ষণের সহিত বিলম্বিত ঋতুস্রাবে উপযোগী।যেখানে কয়েক মাসের মধ্যে মাসিক বিলম্বিত হয় কালি কার্ব এমন একটি চিকিৎসার জন্য মূল্যবান ওষুধ।মাসিকের সময় পিঠে ব্যথা উপস্থিত হয়।যখন মাসিক শুরু হয় তখন মাসিক ফ্যাকাশে,পরিমানে কম এবং যৌনাঙ্গে লেগে থাকে ও বেদনার সাথে উপস্থিত হয়।মাসিকের তীব্র গন্ধ থাকতে পারে।ঠান্ডা লাগা এবং পেটে ব্যাথা ও মাথাব্যথা,পিঠের ছোট অংশে বারবোধ, বমি ও বমিভাব মাসিকের সাথে দেখা দিতে পারে।মাসিকের পরিবর্তে চুলকানীযুক্ত সাদা স্রাব হতে পারে।
সাইলেসিয়া ঃ
মাসিক হতে দেরী হলে সে ক্ষেত্রে সাইলেসিয়া নির্দেশিত হয়।পেটে ব্যথা সহ মাসিক বন্ধ থাকলে সাইরেসিয়ায় মাসিক উপস্থিত হয়।যোনি স্রাব এসিডিক,কপাল ব্যথা পিরিয়ডের আগে উত্থিত হতে পারে। মাসিক উত্থাপিত হলে এগুলি সেরে যায়।গন্ধযুক্ত এবং অ্যাসিডিক স্রাবের রোগীর জন্য উপযোগী।মাসিক স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে থাকে।পুরো শরীর জুড়ে বরফ শীতলতা উপস্থিত হতে পারে।সাইলিসিয়া এছাড়াও সাইলেসিয়ার রোগীর মাসিকের পরিবর্তে সাদা স্রাব উপস্থিত হয়।
কষ্টিকামঃভীতুউত্তেজিত ও উদ্বিগ্ন,অন্ধকারে ভয় দুর্ঘটনার আশঙ্কা,এই রুপ রোগীনীদের ঋতুস্রাবে বিলম্ব হইলে এই ঔষধ প্রয়োগ করিতে হয়।
কেন্ট রেপার্টরির সাহায্যে মেয়েদের সঠিক সময়ে মাসিক না হলে সদৃশ ঔষধ নির্বাচন গাইডঃ
মেয়েদের সঠিক সময়ে মাসিক না হলে করণীয় ঃ
জীবনযাপনে পরিবর্তন,শরীরের ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
মানসিক চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে যাতে শরীরে পরিমিত পরিমাণে রক্ত থাকে।
আমার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিষয়ক সকল লেখা একসাথে পড়ুন।এপসটি ডাউনলোড করুন,আপডেট নিন।আমার মোবাইল এপস লিঙ্কঃ
ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার
ইভা হোমিও হল
বাইপাইল,সাভার, ঢাকা।
মোবাইল নংঃ০১৭১৬৬৫১৪৮৮
গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন