বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০

হামের হোমিওপ্যথিক চিকিৎসা

Homeopathic Treatment  for Measles (Rubella)



হাম কি?
হাম এক প্রকার সংক্রামক রোগ।এই পীড়া শিশুদের মধ্যে অধিক হয়। প্রথমে জ্বর তৎসহ সর্দি,পুনঃ পুনঃ হাচি কাশি।নাক দিয়া জল পড়ে। চোখ মুখ লাল দেখায়, চোখ জল পুর্ণ। গলায় ব্যাথা,জ্বর ১০১ হতে ১০৪পর্যন্ত হইয়ে থাকে। ২/৩দিনের মধ্যে হাম বাহির হয়।এই রোগকে অবহেলা করা ঠিক নয়। হাম হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার দেখাতে হবে।
হামের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের পার্থক্য বিচার


Ø ব্রাইওনিয়া
   উদ্ভেদ চাপা পড়িয়া মস্তিস্কপ্রদাহ, রোগী ক্রমাগত বাম হাত ও পা নারিতে থাকে, মুখ নাড়িতে থাকে যেন কি চিবাইতেছে,মাথাও নাড়িতে থাকে,অঘোরে দৈনিক কর্মের আলোচনা করিতে থাকে বা বাড়ি যাইতে চাহে,কোষ্ঠকাঠিন্য,ঠোট বা জিহবা শুকাইয়া ফাটিয়া যায়। রোগী কোনরুপ নর-চড়া পছন্ধ করে না , এমন কি চক্ষু মেলিয়া চাহিতে বা শ্বাসগ্রহন করিতে কষ্টবোধ, পিপাসা থাকে না বা অনেক্ষণ অন্তর একবারে অনেকটা জল খাইয়া লয়। নিউমোনিয়ায় দক্ষিণ বক্ষ আক্রান্ত হয় অথচ রোগী আক্রান্ত বা বেদনাযুক্ত স্হানই চাপিয়া শুইতে ভালবাসে, ক্রুদ্ধভাব।
Ø এপিস
    উদ্ভেদ চাপা পড়িয়া মস্তিস্কপ্রদাহ,কোষ্ঠবদ্ধ, প্রস্রাব কমিযা যায় বা বন্ধ হইয়া যায়,চক্ষের নিম্নপাতা ফুলিয়া ওঠে, শীত অবস্হায় পিপাসা, শোথ দেখা দিলে পিপাসা থাকে না;অঘরে মাথা নাড়িতে থাকে, মধ্যে মধ্যে তীব্র চিৎকার করিয়া উঠিতে থাকেেআবৃত থাকিতে চাহে না, বেলা ৩টা হতে জ্বর বৃদ্ধি পায়। উদরাময়ে দুর্গন্ধ মল,হলুদ বর্ণ বা সবুজ বর্ণ,নড়া-চড়ায় বৃদ্ধি বা ক্রমাগত অসারে নির্গত হইতে থাকে।
Ø এন্টিম টার্ট
    দুর্বলতা, নিদ্রালুতা, শ্বাসকষ্ট,সর্দি, বুকের মধ্যে ঘড়-ঘড় করিতে থাকে কিন্তু রোগী এত দুর্বল যে তাহা তুলিয়া ফেলিতে পারে না, সর্বদাই তন্দ্রাচ্ছন্নভাবে পড়িয়া থাকে, নাকের পাতা দুইটি নাড়িতে থাকে,ভীষণ শ্বাসকষ্ট, দক্ষিণপার্শ চাপিয়া শুইতে বমনেচ্ছায় উপশম। ঠোট নীল বর্ণ। বসন্তে এন্টিম-টার্ট এবং হামে সালফার যত বেশি ব্যবহৃত হয়  এত বোধ করি আরকোন ঔষধই নহে।
Ø রাস টক্স
    জিহবার অগ্রভাগ ত্রিকোণ লালবর্ণ, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যথা বা কামড়ানি, অত্যান্ত অস্হির এবং অস্হিরতায় উপশম, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ টিপিয়া দিলে উপশম, পিপাসা থাকিতেও পারে,না থাকিতেও পারে। মুখের কোনে ঘা,জ্বর আসিবার পূর্বে শীতের সহিত শুস্ক কাশি। নন্ধিগ্ধ চিও, ঔষধ খাইতে চাহে না,উদরাময়,রক্ত-ভেদ।
Ø জেলসিমিয়ম
   সর্দি, জ্বর, নাক, চোখ দিয়ে জল পড়ে। ঘন ঘন হাচি।শুস্ক কাশি আচ্ছন্ন ভাবে পড়িয়া থাকে।মাঝে মাঝে উত্তেজিত হইয়া কাদে। মাথা ভীষণ গরম, নড়াচড়া করিতে চায়না। মাঝে মাঝে চমকাইয়া উঠে। পক্ষাঘাত সদৃশ দুর্বলতাবশত রোগী সর্বদাই নিদ্রতের মত পরিয়া থাকে, চক্ষু মেলিয়া চাহিয়া থাকিতে পারে না, হাত পা নাড়িতে পারে না,নাড়িতে গেলে হাত কাপিতে থাকে, জিহবা বাহির করিয়া দেখাইতে গেলে তাহাও কাপিতে থাকে,কিন্তু ঘুমাইতে ঘুমাইতে হঠাৎ পরিয়া যাইবার স্বপ্নে যাহাকে সম্মুখে পায় তাহাকেই জরাইয়া ধর। শীত মেরুদন্ড বাহিয়া ওঠা-নামা করিতে থাকে,শীত অবস্হায় তৃষ্ণা থাকে না, অসাড়ে প্রস্রাব।
Ø সালফার
   প্রবল জ্বর, হাম সামান্য বাহির হইয়া আর বাহির হইতেছে না। ঠোট লাল, হাত পায়ের তালু অত্যন্ত গরম। দিন রাত্রি ছটফট করে নিদ্র হয় না। বিশেষ করে লাট খাওয়া লুন্তিতে ইহা অমোঘ।
Ø বেলেডোনা
   প্রচন্ডজ্বর, মুখমন্ডল চক্ষু লাল। মধ্যে মধ্যে অল্প ঘাম, ঘুম ঘুম ভাব, বারে বারে চমকাইয়া উঠার লক্ষণে ইহা উপকারী।
Ø জেলসিমিয়াম ও আর্সেনিক আয়োড
   শিশুর নাকে জলের মত তরুন সর্দি ঝরে। খুক খুক করিয়া কাশে,ঘন ঘন হাচি,গায়ে অত্যন্ত জ্বর, পায়ের তলার দিকটা ঠান্ডা,চোখ, মুখ ছলছলে। কখনও আচ্ছন্ন ভাবে পড়িয়া থাকে। কখনও উত্তেজিত হইয়া কাদে।প্রভৃতি লক্ষণের সহিত হাম প্রকাশ হোক বা না হোক উক্ত ঔষধ দুটি পর্যায়ক্রমে সেবনে হাম বাহির হইয়া জ্বর ত্যাগ করে।
Ø মর্বিলিনাম
   হামের প্রতিষেধক ঔষধ। রোগীকে এপিডেমিক অবস্হায় মর্বিলিনাম প্রয়োগ করিলে হাম হওয়া বন্ধ করে।


হামের  বাইওকেমিক চিকিৎসা
ফেরাম ফস ও ক্যালি মিউর
সর্ব প্রকার হাম জ্বরে এই ঔষধ দুটি পর্যায়ক্রমে সেবনে হাম বাহির হইয়া জ্বর আরগ্য হয়।হাম বাহির হইতে বিলম্ব হইলে উক্ত ঔষধের মাঝে মাঝে ক্যালি সালফ তিন চার মাত্রা সেবনে হাম বাহির হইতে সহায়তা করে।
পথ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্হা
হামের রোগীর গায়ে ঠান্ডা বাতাস লাগান শীতল জলে স্নান নিষিদ্ধ। সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখিবে।রোগীকে বেশী গরমে রাখা উচিত নয়। সামান্য কাপড় রোগীর গায়ে জরাইয়া রাখা ভাল। রোগীকে সাবধানে রাখবে যেন ঠান্ডা না লাগে। দুগ্ধ বালি, দুগ্ধ সাগু অথবা জল বার্লি পথ্য দিবেন। এলার্জিক খাদ্য নিষেধ।

ইভা হোমিও হল
ডাঃ ইয়াকুব আলী সরকার
বাইপাইল, সাভার, ঢাকা।
মোবাইল নং ০১৭১৬৬৫১৪৮৮।
গভঃ রেজিঃ নং ২৩৮৭৬।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন